বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
খুলনার জিরো পয়েন্টে রূপালী ব্যাংকের উপশাখা উদ্বোধন দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন বসছে বৃহস্পতিবার শ্রমিক স্বার্থ নিশ্চিতে ইসলামী শ্রমনীতি প্রণয়নের বিকল্প নেই দেশব্যাপী বৃষ্টিপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস গরমে অসুস্থ হয়ে ঢামেক কর্মচারীর মৃত্যু দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে জেলেরা, মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার এলপি গ্যাসের নতুন দাম জানা যাবে বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা-যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা তীব্র গরম উপেক্ষা করে নয়াপল্টনে চলছে শ্রমিক সমাবেশ দিল্লির ১০০ স্কুল বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি! নাটোরে জামায়াত-শিবিরের ২০ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার রেস্তোরাঁয় মডেলকে গুলি করে হত্যা ভুল চিকিৎসার অজুহাতে চিকিৎসকদের ওপর আক্রমণ ন্যক্কারজনক: স্বাস্থ্যমন্ত্রী গাম্বিয়ায় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ চীনে গভীর রাতে মহাসড়কে ধস, নিহত অন্তত ১৯ গাজীপুরে ট্রাকের ধাক্কায় প্রকৌশলী নিহত নিঃসঙ্গ নারীদের টার্গেট, আমেরিকায় নেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতারণা ধর্ষণের সময় চিৎকার, গলা চেপে ধরায় মারা যায় শিশু ঝুমুর

‘থানা-পুলিশকে জানালেও কোনো লাভ হয় না’

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮
  • ২১৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: সাভারের আমিনবাজারের আলোচিত ছয় ছাত্র হত্যার চার্জ (অভিযোগ) প্রায় পাঁচ বছর আগে গঠন করা হলেও অদ্যাবধি শেষ হয়নি বিচার কাজ। ধীর গতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায়ই মূলত এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

মামলার খোঁজ-খবর না নিতে অনবরত নিহতের পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আসামিপক্ষের হুমকির বিষয়ে থানা-পুলিশকে জানালেও কোনো লাভ হয়নি বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। হত্যার বিচার চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকিতে চরম আতংক ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন নিহতদের বাবা-মা।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ হত্যার সুবিচার পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন নিহতদের স্বজনরা। প্রতি বছর শবেবরাত এলেই নিহতদের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। কারণ ২০১১ সালের ১৭ জুলাই (শবেবরাতের রাতে) সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলাচরে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের তিন শিক্ষার্থীসহ ছয় কলেজছাত্রকে। নিহতরা হলেন তৌহিদুর রহমান পলাশ, ইব্রাহিম খলিল, কামরুজ্জামান কান্ত, টিপু সুলতান, সিতাব জাবির মুনিব ও শামস রহিম শামীম।

নিহত ইব্রাহিম খলিলের মা বিউটি বেগম বলেন, দেশে কত কিছুর বিচার হচ্ছে। আর এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের (৬ ছাত্র হত্যা) বিচার হচ্ছে না। খুনিরা আদালতে ছাত্রদের হত্যার কথা স্বীকারও করেছে। এর পরও সাত বছর পার হয়ে গেল। দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি। অনেক কষ্ট পেয়ে আমার ছেলে মারা গেছে এ যে কী বেদনার আমি তা কাউকে বলে বোঝাতে পারব না। অসুখ কিংবা অ্যাকসিডেন্ট হয়ে মারা গেলেও এত দুঃখ ছিল না। শবেবরাতের রাতে আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া তা হল খুনিদের বিচার চাই।

আদালতে যাই বলে আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। মামলার খোঁজ-খবর নিতে আদালতে গেলে মেরে ফেলবে বলেছে দুর্বৃত্তরা। গত মাসেও টেলিফোনে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছে। ওই সময় আমিও বলেছিÑ যাই হোক হবে। জীবন গেলেও আদালতে যাবো, সাক্ষী দেবে। জীবনের বিনিময়ে হলেও ছেলে হত্যার বিচার চাইব। তিনি আরও বলেন, বালুর ব্যবসায়ী আব্দুল মালেকই নাটের গুরু। সেই থানা-পুলিশ, চোর-ডাকাত সব ডিল করেন। ওর (মালেকের) বিচার হলেই, সবার বিচার হতো।

নিহত কামরুজ্জামান কান্তর বাবা আবদুল কাদের সুরুজ বলেন, ‘শবেবরাত এলেই ছেলের শোকে কাতর হয়ে যায় কান্তর মা। সারাক্ষণ কান্না করে আর আল্লাহর কাছে বিচার চায়। আমার ছেলেকে হত্যা করে ডাকাতির মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। পবিত্র রাত বলেই আল্লাহর অশেষ রহমতে সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন হয়েছে। সত্য উদ্ঘাটনের পর আমাকে নানা প্রলোভন এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয়েছে। প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর দারুসসালাম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৯১৬) করা হয়। এরপর হুমকি-ধামকি দেয়া অব্যাহত রয়েছে। হুমকি সত্বেও আদালতে গিয়ে এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছি।

মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় চার্জ গঠনের পর থেকে অদ্যাবধি মামলার বাদীসহ ৪৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। অপরদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৩৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ এখন বাকি রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি এ মামলায় নিহত ছাত্র শামস রহিম শামীম বাবা আনিসুল হক চন্দন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া ১৩ মার্চ মামলার এজাহার তৈরীকারী এসআই জোবায়দুল হকের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। আগামী ৯ মে এ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ওই দিন সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৯জন সাক্ষীর প্রতি ইতোমধ্যেই সমন দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর শাকিলা জিয়াছমিন (মিতু) বলেন, এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম দ্রুত অগ্রসর হেেচ্ছ। এ মামলার বাদী, নিহতদের ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার, আসামিদের স্বীকারোক্তি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট ও নিহতদের বাবা-মা’র সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ মামলাটি তিন জন তদন্ত করেছেন। এখন শুধু তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি রয়েছে। আগামী ধার্য দিনে তদন্ত কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। তদন্ত কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ হলেই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ করা হবে। চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে রাষ্ট্রপক্ষের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

নথিপত্র সূত্রে আরও জানা যায়, ঘটনার রাতে ওই ছয় ছাত্রের বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও পরে প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পর কথিত ডাকাতির অভিযোগে বেঁচে যাওয়া আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক। ওই সময় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে। পুলিশ, সিআইডির হাত ঘুরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তভার র‌্যাবের হাতে দেয়া হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করে।

পরবর্তীকালে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেয় এবং থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে। বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়। ২০১৩ সালের ৮ জুলাই আদালত ৬০ আসামির বিরদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন। ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভিকটিম আল-আমিনকে একই ঘটনায় করা ডাকাতি মামলা থেকে সেদিন (চার্জ গঠনের সময়) অব্যাহতি দেয়া হয়। এ মামলায় ৯ আসামি পলাতক রয়েছেন।

এরা হলেন সাব্বির, সালাম, আফজাল, মাসুদ, শাহদাত, আমির হোসেন, মোবারক, সাত্তার ও কালাম। আর আসামি রাশেদ মারা গেছেন। এ ছাড়া প্রধান আসামি আব্দুল আব্দুল মালেকসহ ৫০ আসামি জামিনে আছেন। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে ১৪ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com