তিস্তা নদী নিয়ে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন করেছে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার হাজারো বাসিন্দা।
মহাপরিকল্পনার অধীনে বহুমাত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্যাটেলাইট শহর স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণে নতুন আশায় বুক বেঁধেছে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। আর তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে রোববার সকালে তিস্তার ১১৫ কিলোমিটার অববাহিকার দুই পাড়ে সমাবেত হয় হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দাদের এই মানববন্ধনে। সরকার ও সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ২৩০ কিলোমিটারের এই মানববন্ধন শুধু দেশেই নয় উপমহাদেশের ইতিহাসেও বিরল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা তিস্তা ভাঙনে বিলীন হওয়া জমি, বসতবাড়ি পুনঃউদ্ধারের দাবি জানায়। তিস্তার ভাঙন, বন্যায় ঢলের আঘাত আর শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য হাহাকারের কথা স্মরণ করে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তাদের দীর্ঘ দিনের বঞ্চনা ঘুচবে। উদ্ধার করা সম্ভব হবে স্থানীয়দের বসতবাড়িসহ নদীর জমি। আর শুষ্ক মৌসুমে এই অঞ্চলের পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট হওয়া সংকটও দুর হবে বলে মনে করেন তারা।
পাশাপাশি এই প্রকল্প ওই অঞ্চলে নদী ভাঙনরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করছেন তারা। বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকট মোকাবিলা তিস্তা নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিতে পুনঃখননের দাবি করে তারা বলেন, নদীর গভীরতা বাড়লে শুষ্ক মৌসুমেও পানির অভাব হবে না। এ ছাড়া বন্যায় আমাদের ক্ষয়ক্ষতিও কম হবে।
তিস্তানদীকে উপজীব্য করে বেঁচে থাকা মানুষ, নদী নিয়ে আন্দোলন করা বিভিন্ন সংগঠনকে সম্পৃক্ত করাই এই কর্মসূচি অয়োজনের উদ্দেশ্য বলে জানান আয়োজক তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগঠনের রংপুর অঞ্চলের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি। তিনি বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি খরা থেকে বাঁচতে ও শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকট মোকাবিলায় আমরা তিস্তা চুক্তি ও তার বাস্তবায়নও চাই।
তিস্তা অববাহিকার ৫ জেলার জীবনধারা বদলে দিতে কৃত্রিম জলাধার নির্মাণ করে সেচ প্রদান ছাড়াও বহুমাত্রিক উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্যাটেলাইট শহর, বিদ্যুৎকেন্দ্র, অর্থনৈতিক জোন, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নৌপথ-বন্দর নির্মাণসহ তিস্তা সুরক্ষায় গ্রহণ করা হয়েছে এই মহাপ্রকল্প।
বাংলা৭১নিউজ/এএম