শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
অবশেষে কাজী নজরুলকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি একদিনে ইউক্রেনের ১২০০ সৈন্য-যুদ্ধবিমানসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির দাবি রাশিয়ার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শাহাদাত হোসেন খান হিলু মারা গেছেন বিজয়ের ব্যাটে রাজশাহীর প্রথম জয়, দ্বিতীয় হার ঢাকার বাদ মহিউদ্দিন চৌধুরী, শহীদ ওয়াসিমের নামে হলো চট্টগ্রামের উড়ালসড়ক উত্তেজনার পারদ ছড়ানো ম্যাচে মুখোমুখি রংপুর-বরিশাল প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইপিআর নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হবে শিক্ষকতাকে প্রথম শ্রেণির পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে : হাসনাত ১৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল কিনবে সরকার বাংলা‌দেশি-ভারতীয় আটক জেলেদের হস্তান্তর ৫ জানুয়া‌রি হাসপাতালে পরিবারের সবাই, অভিনেত্রী অঞ্জনা সংকটাপন্ন এক সমন্বয়কের নেতৃত্বে প্রশাসন ভবনে তালা, অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মচারী আহত রাতুলকে বিজিবির সহায়তা বিএফআইইউয়ের সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি, ইউপিডিএফ সদস্য নিহত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও মুজিব কিল্লা নির্মাণে দুর্নীতির অনুসন্ধান দুদকের জালে ডাকের সাবেক ডিজি সুধাংশু শেখর ভদ্র মধুমতীর পানি বাড়ায় ভাঙনের কবলে ‘স্বপ্ন নগর’ আশ্রয়ণ প্রকল্প যশোরের মাহফিলে আসুন, দেখা হবে, কথা হবে গর্ভবতী স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

তিস্তায় বাড়ছে পানি ভাঙছে বাড়ি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০
  • ৪৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,(লালমনিরহাট)প্রতিনিধিঃ উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ফলে জেলার পাঁচ উপজেলায় তিস্তা ও ধরলার তীরবর্তী এবং চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে তিস্তার তীব্র ভাঙন। গত দুদিনে ভাঙনে পাঁচ শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। একদিকে পানি অন্যদিকে ভাঙনে অসহায় হয়ে পড়েছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।

এদিকে অব্যাহতভাবে পানি বাড়ার কারণে তিস্তা মধ্যবর্তী চর এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রোববার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। সকাল ৯ টায় ১৫ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ২০ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়। ব্যারাজটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

গতকাল শনিবার সন্ধায় ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও রাত ৯টার দিকে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। চলতি বন্যায় তিস্তা নদীর এটাই সর্বোচ্চ পানি প্রবাহের রেকর্ড।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত থেকে পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। শনিবার রাতেও পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে। এ কারণেই নদীর চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে। তবে রোববার সকাল থেকে পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও সন্ধ্যার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালীগঞ্জ উপজেলার চর বৈরাতী, ভোটমারী, কাকিনা, হাতীবান্ধা উপজেলার সিদুর্ণা, গড্ডিমারী, দোয়ানী, ধুবনী, ডাউয়াবাড়ি এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের লক্ষাধিক পরিবার তিন দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে এসব এলাকার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চর এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় চতুর্থ দফা বন্যার কারণে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগব্যাধি।

এদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ও সিন্দুর্না ইউনিয়নের প্রায় তিন শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসব পরিবার স্থানীয় বাঁধে তাঁবু টাঙিয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। পরিবারগুলোর মাঝে এখনও কোনো সরকারি সাহায্য পৌঁছায়নি।

ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে পাটিকাপাড়া ইউনিয়নে পশ্চিম হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পুর্ব হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি। উপজেলার সিংঙ্গীমার ইউনিয়নের ধুবনী এলাকার ভেসীর বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। তিস্তার প্রবল স্রোতে যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বাঁধটি। স্থানীয়রা বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে কাজ করছেন।

পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব হলদিবাড়ি গ্রামের সাদেক আলী বলেন, রাতে পানির প্রবল স্রোতে সব কিছু হারিয়ে শুধু টিনের ঘরটি রক্ষা করতে পেরেছি, সব ভেসে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।

তিন দিন ধরে পানিবন্দি গড্ডিমারী ইউনিয়নের তাসলিমা আক্তার জানান, শিশুসন্তান নিয়ে তিন দিন ধরে পানির জন্য ঘর থেকে বের হতে পারছি না। অন্য বাড়ি থেকে একবার রান্না করে সেই খাওয়ায় এই পর্যন্ত আছি। অনেক কষ্টে দিন পার করছি।

জানা গেছে, গত ৪৮ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা ক্রমে কমে গিয়ে বন্যার উন্নতি ঘটে। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই ফের উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার থেকে বর্তমানে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলা নদী পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফিউল আলম রোকন জানান, গত তিন দিন থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙনে ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের প্রায় ২০০ পরিবার ঘর হারিয়েছেন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই হাজার পরিবার।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর জানান, পানিবন্দি পরিবারগুলোর সব সময় খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। ত্রাণ পর্যাপ্ত থাকায় প্রতিদিনই ত্রাণ দেয়া অব্যাহত আছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসআর

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com