বাংলা৭১নিউজ,(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ নীলফামারীতে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। আজ সোমবার সকাল আটটায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল রবিবার রাত ১২টায় সেখানে পানি প্রবাহ ছিল বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপরে। তিস্তার ব্যারাজ এলাকা ও এর আশপাশ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারী করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
তিস্তার এমন রুদ্রমূর্তিতে রাতে ব্যরাজ এলাকায় ছুটে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ। দীর্ঘ সময় অবস্থান করে তিনি ঘুরে দেখেন ব্যারাজ ও ফ্লাড বাইপাস এলাকা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম, নির্বাাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) একেএম সামসুজোহা, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুল হক।
উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার অতিক্রম করে গত শুক্রবার। সে থেকে বিপৎসীমার ওপরে চলছে পানি প্রবাহ। টানা চার দিনের ঢলে জেলার ডিমলা উপজেলার নদী বেষ্টিত পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছচাপনী, পশ্চিমছাতনাই ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবার দফায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অধিবাসীরা।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র মতে, উজানের ঢলে গতকাল রবিবার রাত ১২টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সোমবার সকাল আটটায় কিছুটা কমে ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে গত শুক্রবার দুপুরে। সেদিন রাতে ওই পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ৩৩ সেন্টিমিটার ও রবিবার সন্ধ্যা ছয়টায় ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই পয়েন্টে নদীর পানির বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।
চলতি বর্ষায় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে গত ২৬ জুন। সেদিন সকাল থেকে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অব্যাহত থাকে ২৮ জুন পর্যন্ত। ২৯ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত বিপদসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ৪ জুলাই দ্বিতীয় দফায় বিপদসীমা অতিক্রম করে ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ৬ জুলাই থেকে ১০ জুলাই সকাল ৯টা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার নিচে ছিল। সেদিন দুপুরে বিপৎসীমার ওপরে উঠলে রাতে ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ বলেন,‘তিস্তা ব্যরাজের পানি ধারণ ক্ষতা রয়েছে সাড়ে চার লাখ কিউসেক। এর বেশী প্রবাহ হলে পানি অপসারণের জন্য প্লাট বাইপাস খুলে দিতে হয়। গত রাতে ওই ফ্লাট বাইপাস খুলে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বাংলা৭১নিউজ/এসআর