বাংলা৭১নিউজ, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মধ্য মদনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ৩ শিক্ষার্থীকে পেটালেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান ফরিদ।
এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার আইসিটি বিষয়ের ক্লাশ চলাকালীন অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শর্মি আক্তার, খাদিজা আক্তার ও নাহিদ হোসেনকে প্রধান শিক্ষকের অফিসে ডেকে নেন দপ্তরী খলিলুর রহমান।
প্রধান শিক্ষকের অফিসে তখন বসা ছিলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান ফরিদ ও তার স্ত্রী সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিতা। ৩ শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের অফিসে প্রবেশ করার পরই সভাপতি দপ্তরীকে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন।
বাইরে থেকে অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়ার পর ২টি বেত দিয়ে প্রথমে নাহিদকে এলোপাতাড়িভাবে পেটান সভাপতি ফরিদ। এক পর্যায়ে নাহিদ পা ধরে প্রাণ ভিক্ষা চাইলে সভাপতি লাথি মেরে তাকে ছিটকে ফেলে দেন।
এরপর সভাপতি অন্য দুই ছাত্রী শর্মি ও খাদিজাকে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে জখম করেন। ঘটনার পর ৩ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে প্রধান শিক্ষকের অফিস থেকে বের করে দেয়া হয়।
প্রধান শিক্ষকের সামনে এমন নির্মম ঘটনা ঘটলেও তিনি কোন প্রতিবাদ করেননি।
নির্যাতিত শিক্ষার্থী শর্মি ও খাদিজা জানায়, রমজান মাসে সরকারি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও অষ্টম শ্রেণী ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হচ্ছে। আমরা কোচিং ক্লাশ করার জন্যই বিদ্যালয়ে যাই। শ্রেণী কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে আমাদেরকে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এদের মধ্যে নাহিদ বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবারও সে স্কুলে যায়নি।
সহপাঠিরা জানায়, নাহিদ মেধাবী ছাত্র। পঞ্চম শ্রেনীর সমাপনী পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। অষ্টম শ্রেণীতেও সে জিপিএ-৫ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ অবস্থায় নাহিদকে মারধর করায় সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এ
দিকে খবর পেয়ে নির্যাতিত শিক্ষার্থী শর্মির বাবা করিম রাড়ি বিদ্যালয়ে গিয়ে তার মেয়েকে পেটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন সভাপতি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, সভাপতির মেয়ের সঙ্গে নাহিদ মুঠোফোনে কথা বলেছে। আর কথা বলায় সহায়তা করেছে শর্মি ও খাদিজা। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ৩ জনকে পিটিয়ে জখম করেছেন। এদের মধ্যে নাহিদকে বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করার হুমকিও দিয়েছেন সভাপতি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান ফরিদ উপজেলা যুবলীগেরসহ সভাপতি হওয়ায় ঘটনার সময় ভয়ে শিক্ষকরা প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস