মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শনিবার আফগানিস্তানের তালেবান নেতাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কারের হুমকি দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, দেশটিতে আটক আমেরিকানদের সংখ্যা পূর্বের ধারণার চেয়ে বেশি হতে পারে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
রুবিওর এই হুমকি এক সপ্তাহেরও কম সময় পরে এসেছে, যখন আফগান তালেবান সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্র একে অপরকে বন্দি বিনিময় করেছে, যা ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের শেষ পদক্ষেপগুলোর একটি।
রুবিও এই কঠোর সতর্কতা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই এক রকম আক্রমণাত্মক ভাষায় ছিল।
রুবিও তার টুইটে বলেন, ‘শুনতে পাচ্ছি, তালেবান আরও বেশি আমেরিকানকে বন্দি করে রেখেছে, যেটি আগে রিপোর্ট করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘যদি এটি সত্যি হয়, তাহলে আমাদের তাদের শীর্ষ নেতাদের ধরিয়ে দিতে অত্যন্ত বড় পুরস্কার ঘোষণা করতে হবে, হয়তো এমনকি যা আমরা বিন লাদেনের জন্য রেখেছিলাম তার থেকেও বড়’।
এখানে তিনি আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ইঙ্গিত করেছেন, যাকে ২০১১ সালে মার্কিন বাহিনী পাকিস্তানে হত্যা করেছিল।
রুবিও এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত কিছু জানাননি, তবে দীর্ঘ সময় ধরে আফগানিস্তানে কিছু আমেরিকান নাগরিকের নিখোঁজ থাকার অভিযোগ রয়েছে।
বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, তালেবান আফগানিস্তানে আটক সবচেয়ে পরিচিত আমেরিকান রায়ান কোরবেটকে মুক্তি দেয়। রায়ান তার পরিবারের সঙ্গে আফগানিস্তানে বসবাস করছিলেন এবং ২০২২ সালের আগস্টে তাকে আটক করা হয়েছিল। এছাড়া তালেবানের হাত থেকে মুক্তি পায় উইলিয়াম ম্যাককেন্টি, যার সম্পর্কে খুব কম তথ্য পাওয়া গেছে।
এছাড়া, এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের হত্যা করার পরিকল্পনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে খান মোহাম্মদকে মুক্তি দেয়। যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি কারাগারে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছিলেন। খান মোহাম্মদকে হেরোইন ও আফিম পাচারের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
২০২১ সালে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের প্রশাসন তালেবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করেছিল, যার ফলে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি সম্পন্ন হয়। বাইডেন এই চুক্তি বাস্তবায়ন করেন, কিন্তু তার পরপরই আফগানিস্তানের পশ্চিমা-সমর্থিত সরকার দ্রুত পতন হয় এবং তালেবান আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে।
বর্তমানে তালেবান সরকার নারীদের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এরইমধ্যে নারীদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগে তালেবানের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ