বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশে ধূমপান ও চর্বনযোগ্য তামাক সেবনের ফলে ৮টি রোগে প্রায় ১২ লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত। এর মধ্যে তিন লাখ ৮২ হাজার মানুষ পঙ্গুত্বের শিকার। তাই জনস্বার্থ রক্ষায় সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের কার্যক্রমকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।
বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর সুপ্র কার্যালয়ে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে স্থায়ীত্বশীল আর্থিক যোগান নিশ্চিতে দ্রুত সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি পাস করা জরুরি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট যৌথভাবে এ সভা আয়োজন করে।
সুপ্র সভাপতি হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, দর্পণের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুব মোর্শেদ, মঞ্চুরানী প্রামানিক ভাইস চেয়ার সুপ্র, ডব্লিউবিবি ট্রাসের আমিনুল ইসলাম সুজন।
আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নকে রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে রোগ-প্রতিরোধের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। সুযোগ সন্ধানী ও মুনাফালোভী তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্নভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। যা সুশাসনের অন্তরায়। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে গতিশীল করার স্বার্থে তামাক কোম্পানিতে সরকারের যে শেয়ার রয়েছে তা বাদ দেয়া উচিত।
মো. মাহবুব মোর্শেদ বলেন, অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান, পরোক্ষ ধূমপান ও সাদাপাতা, গুল, জর্দা ইত্যাদি তামাকের ব্যবহার। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণকে সবক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তামাকজাত দ্রব্যের উপর এক শতাংশ সারচার্জ আরোপ করে, যা রোগ-প্রতিরোধে অর্থায়নের বিশাল সুযোগ। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল ২০১৬ সালের শুরুতে স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত এ নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় সারচার্জ হিসেবে প্রাপ্ত অর্থের সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দ্রুত এ নীতিমালা পাস করা জরুরি।
হারুনুর রশিদ বলেন, দেশের বড় অংশ তরুণ। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের টার্গেট করে প্রচারণা চালাচ্ছে। এ প্রবণতা রুখতে হবে। এছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন, তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি, তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় যেসব ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানিগুলো অনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সুশাসনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে, সেসব বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সময় এসেছে। তামাক কোম্পানির অবৈধ হস্তক্ষেপে যেসব ক্ষেত্রে সুশাসন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করতে সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) সক্রিয় হবে।
মতবিনিময় সভায় একলাব, পাবনা গ্রগতি সংস্থা, প্রদেশ, সলিডারিটি, এইড ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন তামাক-বিরোধী সংগঠন অংশগ্রহণ করে।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস