নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসরে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জোড়া গোলে ম্যাচ জয়ের মধ্যমণি হয়ে উঠেছিলেন তহুরা খাতুন। সেমিফাইনালেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন। এবার করলেন হ্যাটট্রিক। তার হ্যাটট্রিকে ভূটানকে ৭-১ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে ফাইনালে পা রেখেছে বাংলাদেশ।
রোববার (২৭ অক্টোবর) নেপালের কাঠমাণ্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই বল পজিশনে নিয়ে খেলতে বাংলাদেশ। শুরুতেই এগিয়ে যায় তারা। ষষ্ঠ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ঋতুপর্না। বল নিয়ে ভূটানের বক্সের দিকে এগিয়ে গিয়ে তহুরা পাস দেন বামপ্রান্ত ধরে ছুটে আসা ঋতুপর্নাকে। কয়েক কদম এগিয়ে বামপায়ের জোরালো শটে চোখ জুড়ানো গোলটি করেন ঋতু।
গোল পেয়ে উজ্জীবিত হয়ে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। বল নিজেদের পায়ে রেখে একের পর এক আক্রমণে ভূটানের রক্ষণ ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন সাবিনা খাতুন-তহুরা খাতুনরা। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় গোলটিও আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। এবার দৃশ্যপটে তহুরা। মারিয়া মান্ডা ডানপাশ থেকে পাস দেন তহুরাকে। ড্রিবলিংয়ের জাদু দেখিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়ান তহুরা।
বাংলাদেশ তৃতীয় গোলটি আদায় করে নেয় ম্যাচের ২৫তম মিনিটে। এবার গোলটি করেন অধিনায়ক সাবিনা। তার গোলেও সহায়তা করেন মারিয়া। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে একক নৈপুণ্যে ভূটানের বক্সের ডান দিক ধরে এগিয়ে সাবিনাকে পাস দেন এই উইঙ্গার। ঠান্ডা মাথায় দলকে ৩-০ গোলে এগিয়ে নেন সাবিনা।
তিন গোলে এগিয়ে গোলের নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় ৩৪তম মিনিটে দলের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তহুরা। মাঝমাঠ থেকে এক সতীর্থের উঁচু করে বাড়ানো বল পেয়ে একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে ডান পাশ থেকে কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন ভারতের বিপক্ষে দুই গোল করা এই স্ট্রাইকার।
দুই মিনিট পর আবারও স্কোরারের তালিকায় নাম লেখান সাবিনা। গোলরক্ষক রূপনা চাকমার লং শটে হেডে মাথা ছুঁইয়ে মাঝমাঠ থেকে বলের দিক পরিবর্তন করে দেন একজন। সেখান থেকেই বল পেয়ে ঝলক দেখান বাংলাদেশের অধিনায়ক। ড্রিবলিংয়ের জাদু দেখিয়ে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন ভূটানের বক্সে। এরপর এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে পাশ কাটিয়ে দলকে এনে দেন পাঁচ গোলের লিড।
বিরতির পর হ্যটট্রিক আদায় করে নেন তহুরা। ৫৭তম মিনিটে বামদিক থেকে সাবিনা পাস দেন মারিয়াকে। দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে মারিয়া খুঁজে নেন তহুরাকে। বাকি কাজটা করতে তহুরার মোটেও সমস্যা হয়নি। বাম পায়ের আড়াআড়ি শটে খুঁজে নেন জাল।
আক্রমণ যেন থামছিলোই না। ভূটানের মেয়েদের নিয়ে ছেলেখেলায় মেতেছিলেন সাবিনারা। বারবার হানা দিচ্ছিলেন তাদের রক্ষণে। ৭২তম মিনিটে সপ্তম গোলটি আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নামা সানজিদা আক্তার কর্নার থেকে উড়িয়ে দেন বল, মাথা ছুঁইয়ে কেবল দিক পাল্টে দেন ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিন। তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না ভূটান গোলরক্ষকের।