বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে টানা তিন দিন সড়ক অবরোধ ও বাস ভাঙচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে রাজধানীতে বাস চলাচল কমে গেছে।
গতকালের মতো আজও রাজধানীর প্রত্যকটি রুটে বেশিরভাগ বাস চলাচল করছে না। ফলে সকালে গন্তব্যের উদ্দেশে যারা বের হয়েছেন, তাদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।
গত রবিবার দুপুরে বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। ঘটনার পর নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসতে হাসতে বিষয়টিকে নিয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চার দিন ধরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে অবস্থান নেয়। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পুরো ঢাকা কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সচিবালয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পরে তিনি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। পরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় আজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে বুধবার রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল অনেক কম। বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক ছিল গণপরিবহনশূন্য। এর ফলে অ্যাপস ভিত্তিক যানবাহন, সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশায় করে অফিস যেতে হচ্ছে। বিভিন্ন রুটে দুই-একটি বাস চলাচল করলেও সেগুলোতে ছিল যাত্রীদের গাদাগাদি অবস্থা।
সকালে গাবতলী, মিরপুর, টেকনিক্যাল মোড়, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রতিটি জায়গায় কর্মস্থলগামী মানুষজনকে রাস্তার পাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রেজাউল করিম। ইস্কাটন গার্ডেনে অফিস ধরতে সকাল সাতটায় উত্তরা থেকে রওনা হন তিনি। মগবাজারে বাস থেকে নামেন সকাল সোয়া নয়টার দিকে। ঢাকাটাইমসকে রেজাউল বলেন, ‘গণপরিবহন সঙ্কট হতে পারে এমন আশঙ্কায় সকাল সাতটার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছি। অফিসে গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষার পর কোনোমতে একটি বাসে উঠে পড়ি। যে বাসে উঠেছিলাম সেটিতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তারপরেও আসতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’
সাভার যাওয়ার জন্য বাংলামোটরে বাসের জন্য অপেক্ষায় আছেন আবিদ হাসান। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও যানবাহন না পেয়ে বাসায় ফিরে যাওয়ার চিন্তা করছেন তিনি। জানান, ‘প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। সাভার থেকে আসা একটি বাস বিপরীত দিকে যেতে দেখলাম। কিন্তু সেগুলো আবার ফিরে সাভার যাবে কি না বুঝতে পারছি না। তাই অফিসে যাব কি না চিন্তায় আছি।’
এদিকে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের জের ধরে আজও শিক্ষার্থীরা রাজধানীর দুএকটি স্থানে সড়ক অবরোধ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সাত মসজিদ রোডে ছাত্ররা একটি র্যালি নিয়ে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর মিরপুর রোডে যাচ্ছে। সূত্র: ঢাকাটাইমস।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস