সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট, ওএসডি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব ভারতে পালানোর সময় সাবেক ভূমিমন্ত্রী আটক শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী গ্রেফতার টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে ভারত সরকারের প্রতি জি এম কাদেরের ত্রাণ সহায়তার আহ্বান ডেঙ্গুতে আরো ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১২২৫ বাজার মনিটরিংয়ে টাস্কফোর্স গঠন হচ্ছে : আসিফ ভারত থেকে এলো ২ লাখ ৩১ হাজার ডিম, পিস ৭.৫ টাকা কোনো নিরাপত্তাঝুঁকি নেই, নির্বিঘ্নে পূজা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সুদ মওকুফ করে ঋণ রিশিডিউল করার দাবি চামড়া ব্যবসায়ীদের ১০০০ আইটি ইঞ্জিনিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিতে চায় জাইকা বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিডি দুই জাহাজে অগ্নিকাণ্ড: নৌ-মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গঠন অভ্যুত্থানে ১০৫ শিশু নিহত, প্রত্যেক পরিবার পাচ্ছে ৫০ হাজার টাকা ক্রিকেটার ছদ্মবেশে শ্রমিক নেওয়ার অভিযোগে ২১ বাংলাদেশি আটক ইসরায়েলি হামলা হলে জবাব দিতে পরিকল্পনা প্রস্তুত ইরানের সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব আমিনুল গ্রেপ্তার অনুমাননির্ভর কোনো কথা বলতে চাই না: সাখাওয়াত হোসেন

ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না থাকায় সংশ্লিষ্ট পাঁচ জেলার (ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজিপুর) জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডেকেছেন হাইকোর্ট। এসব জেলার অবৈধ ইটভাটার তালিকা নিয়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল আদালতে তাদের যুক্ত থাকতে বলা হয়েছে।  

এছাড়া বায়ু দূষণ রোধে গত দুই মাস (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) পরিবেশ অদিদপ্তরের ভ্রম্যমাণ আদালত কী কাজ করেছে, তার একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে। বায়ু দূষণ সংক্রান্ত চলমান একটি রিটে সম্পূরক আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর এ আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষ থেকে গত ৩০ জানুয়ারি এ আবেদন করা হয়েছিল।  

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী মো. শাহজাহান, দক্ষিন সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাইদ আহেমেদ রাজা এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান।  

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ  বলেন, ‘কদিন পর পরই গণমাধ্যমে খবর আসছে বায়ু দূষণের দিক থেকে ঢাকা এক নম্বরে। অথচ ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে। বায়ু দূষণ রোধে কোন কর্তৃপক্ষের কী কাজ এবং কী কাজ তারা করবে আদালতের নির্দেশনায় তা স্পষ্ট করে বলা আছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্রিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো যদি আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করে পদক্ষেপ নিতো তাহলে ঢাকার বায়ু দূষণের মাত্রা হয়তো এতটা ব্যপকতর হতো না। যে কারণে ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে একটি সম্পূরক আবেদন করেছিলাম। আদালত সেটির শুনানি নিয়ে কর্তৃপক্ষগুলোর কাছে পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন। ঢাকাসহ পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডেকেছেন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের ভার্চুয়াল আদালতে সংযুক্ত থাকতে বলেছেন। ’

এ আইনজীবী বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি হওয়ার পর তাদের মতামতের ভিত্তিতে আদালত বায়ু দূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সে সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময় আদালত আটবার নির্দেশ দিলেও বিবাদিরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ’

এর আগে, ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পক্ষে রিট আবেদন করা হয়।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ওই বছর ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন। ঢাকা শহরে যারা বায়ু দূষণের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুই বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে সেদিন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা ওই আদেশের ১৫দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে বলা হয়েছিল যে, যাতে শুকনো মৌসুমে ধুলো ছড়িয়ে বায়ু দূষণ বাড়তে না পারে। পাশাপাশি ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকাগুলোতে দিনে অন্তত দুই বার করে পানি ছিটাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।   

এসব নির্দেশনার পাশাপাশি আদালত সেদিন রুলও জারি করেছিলেন। ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছিল রুলে।

বন ও পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, ডিএমপি কমিশনার, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ১১ বিবাদিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।  

এই আদেশের তিন মাস পর পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন আদালত। ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তর কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, আদালত তার একটি প্রতিবেদন চান পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক জিয়াউল হকের কাছে।   

এরপর এক সম্পূরক অবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকার বায়ু দূষণ কমাতে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য পরিবেশ সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এছাড়াও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এলাকায় যেসব ইটভাটা অবৈধভাবে বা পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে চলছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সেগুলো ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধ করতে বলেন।

আর  প্রয়োজনে অতিরিক্তি লোকবল নিয়োগ করে রাস্তা, ফুটপাথ, ফ্লাইওভার, ওয়াকওভারের যেসব জায়গায় ধুলাবালি, ময়লা বা বর্জ্য-আবর্জনা জমিয়ে রাখা হয় বা জমে থাকে সেসব ধুলাবালি, ময়লা, বর্জ্য-আবর্জনা সাত দিনের মধ্যে সিটি করপোরেশনকে অপসারণ করতে বলেন।  

এরপর রিটকারী পক্ষের আরেক আবেদনের আদালত ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি আরও কয়েকটি নির্দেশনা দেন।

১. যেসব যানবাহন নির্ধারিত মাত্রার বেশি কালো ধোঁয়া ছড়াচ্ছে সেগুলো জব্দ করতে হবে।   

২. সড়ক পরিবহন আইনের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক যানবাহনের ‘ইকোনোমিক লাইফ’ নির্ধারণ এবং যেসব পরিবহনের ‘ইকোনোমিক লাইফ’ পেরিয়ে গেছে, সেসব পরিবহন নিষিদ্ধে ব্যবস্থা করতে হবে।   

৩. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া টায়ার পোড়ানো বা ব্যাটারি রিসাইকেলিং বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।  

৪. নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজিপুর ও মানিকগঞ্জে যেসব অবৈধ ইটভাটা এখনও বন্ধ করা হয়নি, সেগুলা বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিতে হবে।

উচ্চ আদালতের এসব নির্দেশনার পর করোনাভাইরাস মহামাহীর মধ্যে ঢাকার বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হলেও সম্প্রতি ঢাকার বায়ু দূষণ আবারও চরম পর্যায়ে পৌঁছানোর কারণে সম্পূরক আবেদন করে তা নজরে আনার পর ফের আদেশ দিলেন উচ্চ আদালত।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com