শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লিফলেট বিতরণ এবার কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করলে অসুবিধা হবে : কর্মকর্তাদের সিইসি অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি শেখ হাসিনার দুর্নীতি খুঁজে বের করতে টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ মানচিত্র প্রকাশ, আরব দেশগুলোর কড়া প্রতিবাদ বিমানবন্দরে রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকে জরিমানা, হতে পারে জেলও ৩০ জুনের আগেই মহার্ঘভাতা ঘোষণা মানিকগঞ্জে ডিসির রুমের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান দাবি মানার আল্টিমেটাম দিয়ে ‌‌শাহবাগ ছাড়লেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা শরীয়তপুরে থানা থেকে ওসির মরদেহ উদ্ধার নিক্সন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন শহীদ মিনারের পর শাহবাগ অবরোধ বিডিআর সদস্যের স্বজনদের জেনেভা ক্যাম্পের আলোচিত সন্ত্রাসী চুয়া সেলিম গ্রেপ্তার মা‌র্কি‌নিদের হয়ে ঢাকায় বিশেষ দা‌য়িত্ব সামলাবেন ট্র্যাসি জ্যাকবসন বিসিএসে বাদ পড়া ২২৭ জনের বেশিরভাগই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন রাশিয়ায় বিমানবাহিনীর তেলের ডিপোয় ইউক্রেনের হামলা হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে বরিশালকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো রংপুর

ড্রোন কীভাবে ব্রিটেনের একটি বিমানবন্দর অচল করে দিল

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ১৩৩ বার পড়া হয়েছে
ড্রোন যেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, তাতে করে বিমানবন্দরগুলোকে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: মাত্র কয়েকটি ড্রোনের কারণে ব্রিটেনের অত্যন্ত ব্যস্ত একটি বিমানবন্দর দুদিন ধরে বন্ধ ছিল। গ্যাটউইক বিমানবন্দরে বাতিল করা হয়েছিল শত শত ফ্লাইট। হাজার হাজার যাত্রীকে তাদের ফ্লাইট বাতিল হওয়ার পর মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

বুধবার প্রথম গ্যাটউইক বিমানবন্দরের ওপর প্রথম একটি ড্রোন উড়তে দেখা গিয়েছিল। এরপর দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে বিমানবন্দরের রানওয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। গত দুদিন ধরে সেখানে কয়েকটি ড্রোনের রহস্যজনক ওড়াওড়ি ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী পর্যন্ত তলব করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কে বা কারা এই ড্রোন ওড়াচ্ছিল সেই রহস্য এখনো ভেদ করতে পারেনি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।

কীভাবে মাত্র কয়েকটি ড্রোন ব্রিটেনের বিমান পরিবহন ব্যবস্থায় এরকম মারাত্মক বিপর্যয় তৈরি করতে পারলো? ড্রোন আসলে কী ধরণের ঝুঁকি তৈরি করে?

ড্রোন কী?

ড্রোন কথাটা শুনলেই মনে ভেসে উঠে আকাশ থেকে সামরিক হামলা চালানোর ছবি। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে যে ধরণের অত্যাধুনিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়, তার সঙ্গে ব্রিটেনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ড্রোনের অনেক তফাৎ রয়েছে।

যেসব অসামরিক ড্রোন এখন খেলনার দোকানে বা অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলো আকারে বেশ ছোট। এগুলো আসলে এক ধরণের কোয়াড-কপ্টার। রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মূলত শখের বসে বা ছবি তোলার কাজে ব্যবহৃত হয় এসব ড্রোন।

মাত্র ৫০ ডলার থেকে শুরু করে কয়েক হাজার ডলার দামেরও ড্রোন আছে। নির্মাণ শিল্প এবং ব্যবসা-বাণিজ্যেও এখন ড্রোন ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিমানের কী ক্ষতি করতে পারে ড্রোন

২০১৭ সালের অক্টোবরে কানাডায় একটি বাণিজ্যিক বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিল একটি ড্রোন। বিমানটির একটি ডানায় আঘাত করেছিল এটি। এতে বিমানটির সামান্য ক্ষতি হয়, তবে এটি নিরাপদে অবতরণ করতে পেরেছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি ড্রোন উড়োজাহাজের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি ড্রোন উড়োজাহাজের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ড্রোন কোন উড়ন্ত বিমানের কী ধরণের ক্ষতি করতে পারে, তা নিয়ে গবেষণা এখনো পর্যন্ত খুব কম। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাস্তবে এ নিয়ে যেসব পরীক্ষা চালিয়েছে, তাতে তারা আসলে নানা ধরণের উপসংহারে পৌঁছেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেটন এরকম একটি গবেষণা চালিয়েছিল। প্রায় ২৩৮ কিলোমিটার বেড়ে চলতে থাকা একটি বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের সঙ্গে এক কেজি ওজনের একটি ড্রোনের মধ্য আকাশে সংঘর্ষ হলে কী হতে পারে, সেটি দেখানো হয়েছিল এই পরীক্ষায়। তাদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, এতে উড়োজাহাজের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

এ ধরণের আরেকটি গবেষণা চালায় অ্যালায়েন্স ফর সিস্টেম সেফটি অব আনম্যান্ড এয়ারক্রাফ্ট সিস্টেম থ্রু রিসার্চ এক্সসেলেন্স (অ্যাসিউর) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটি। তাদের গবেষণা বলছে, কোন পাখি যদি কোন উড়োজাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে যে ক্ষতি হবে, ড্রোনের ধাক্কায় তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি হতে পারে। আর এই সংঘর্ষে ড্রোনটির লিথিয়াম ব্যাটারি থেকে আগুন ধরে যাওয়ার ঝুঁকিও আছে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের রোবোটিক্সের লেকচারার রবি বৈদ্যনাথান বিবিসিকে বলেন, কোন বড় উড়োজাহাজের জন্য ড্রোন যে ঝুঁকি তৈরি করে সেটা ছোট হলেও উপেক্ষা করা যায় না। এটি উড়োজাহাজের টারবাইনের ভেতর চলে যেতে পারে বলে আশংকা আছে। এছাড়া ড্রোনটি যদি ওজন দু কেজির বেশি হয়, সেটি উড়োজাহাজের ককপিটের উইন্ডশিল্ডও ভেঙ্গে ফেলতে পারে।”

বিমান নিরাপত্তা বিষয়ক কোম্পানি কোয়ান্টার এভিয়েশনের প্রধান নির্বাহী মার্টিন লান্নি বলেন, “ড্রোন দেখতে হয়তো খুবই ভঙ্গুর মনে হতে পারে। কিন্তু এর ব্যাটারি কিন্তু বেশ বড়। একটা পাখির সঙ্গে তুলনা করলে ড্রোন কিন্তু অনেক বেশি বিপদজনক। বিশেষ করে এটি যদি উড়োজাহাজের ইঞ্জিন বা ফিউজেলাজের ভেতর ঢুকে পড়ে।

বিমানবন্দরগুলোকে ড্রোনের বিপদ থেকে রক্ষার উপায় কী?

২০১৭ সালে ড্রোন থেকে উড়ন্ত বিমানের জন্য ৯২টি মারাত্মক ঝুঁকির ঘটনা দেখা গেছে।২০১৭ সালে ড্রোন থেকে উড়ন্ত বিমানের জন্য ৯২টি মারাত্মক ঝুঁকির ঘটনা দেখা গেছে।

এ বছরের জুলাই মাসে ব্রিটেনে একটি নতুন আইন কার্যকর করা হয়, যাতে কোন বিমান বন্দরের এক কিলোমিটারের মধ্যে ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া চারশো ফুটের বেশি উচ্চতায়ও ড্রোন ওড়ানো নিষেধ। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আইন যথেষ্ট নয়। কারণ বিমান যখন অবতরণ করে, তখন এই চারশো ফুট উচ্চতার ওপরে ড্রোন না ওড়ানোর বিষয়টি আসলে আর সেভাবে কার্যকরী নয়। আর যাদের বাজে উদ্দেশ্য আছে, তারা তো আর আইনের তোয়াক্কা করে না।

ব্রিটেনে অনেক কারাগারের ভেতর মাদক পাচারের জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হতো। সেটা ঠেকানোর একটা উপায় তৈরি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। তারা ড্রোন যেন কারাগারের কাছাকাছি আসতে না পারে, সেজন্যে সেখানে রেডিও সিগন্যাল বন্ধ করে দেয়।

বিমানবন্দরগুলোকে ড্রোন হামলা থেকে সুরক্ষা দিতে একই ধরণের ব্যবস্থার কথা সুপারিশ করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। রাডার, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর এবং ক্যামেরা ব্যবহার করে এরকম প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব বলে জানাচ্ছে কোয়ান্টাম এভিয়েশন।

বিশ্বে অসামরিক ড্রোন নির্মাণের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় একটি কোম্পানি হচ্ছে ডিজেআই। তারাও একধরণের জিও ফেন্সিং ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেছে যেটি আসলে কোন ড্রোনকে নিষিদ্ধ এলাকায় উড়তে দেবে না।

কোন ড্রোনকে ধরার উপায় কী?

জাল ছুঁড়ে দিয়ে ড্রোন ধরার কৌশল উদ্ভাবন করেছে ফরাসীরা।জাল ছুঁড়ে দিয়ে ড্রোন ধরার কৌশল উদ্ভাবন করেছে ফরাসীরা।

যদি জ্যামিং বা জিও ফেন্সিং এ কোন কাজ না হয়, তাহলে কোন ড্রোন মাটিতে ফেলে দেয়ার আরও সোজা-সাপ্টা কিছু পথ আছে।

একটি ড্রোনকে ধরতে জাল লাগানো আরেকটি ড্রোন পাঠানোর এরকম একটি উপায় উদ্ভাবন করেছে ফরাসিরা। আর ড্রোন-ডিফেন্স এবং ওপেন ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়ারিং নামে দুটি কোম্পানি একটা জাল ছুঁড়ে দিয়ে ‘বিপথগামী’ ড্রোন ধরে ফেলতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন লেজার রশ্মি দিয়েও পরীক্ষা চালাচ্ছে। তারা কোন ড্রোনের অবস্থান জানার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এটি ধ্বংস করে দিতে পারে। মূলত লেজার বিম দিয়ে ড্রোনটি পুড়িয়ে দেয়া হয়।

“গ্যাটউইক বিমানবন্দরে গত দুদিনে যা ঘটলো, তা আসলে সব বিমানবন্দরকেই এখন ড্রোনের ঝুঁকি নিয়ে আরও গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে বাধ্য করবে”, বলছেন ক্র্যানফিল্ড ইউনিভার্সিটির এরোস্পেসের পরিচালক ইয়ান গ্রাডি।

তিনি বলছেন, বিমানবন্দরগুলো এ নিয়ে সচেতন এবং এজন্যে যে ধরণের প্রযুক্তি ভবিষ্যতে দরকার হবে সেটা নিয়ে তারা গবেষকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: বিবিসি বাংলা/এসকে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com