টানা ভারী বর্ষণের অতিরিক্ত পানি নামতে গিয়ে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের দক্ষিণ-পূর্বাংশের নিরাপত্তা দেয়ালের বিশাল অংশ ধ্বসে পড়েছে। এতে নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে পার্কে থাকা জেবরাসহ নানা জাতের প্রাণীকুল। দেয়ালের পার্শ্ববর্তী বিল থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় পানি স্রোত তীব্র হয়ে নিরাপত্তা দেয়ালটি ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভোরে এ দেয়াল ধ্বসের ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, বুধবার সকাল থেকেই থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত চলে। সারা দিনের মতো রাতেও চলে অবিরাম বর্ষণ। ফলে কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের পানি নামতে গিয়ে নিরাপত্তা দেয়ালে দক্ষিণ-পূর্ব অংশের পানি চলাচল নালা এলাকার বিশাল অংশ ভোরে অকস্মাৎ ধ্বসে পড়ে।
ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ ফোনে বিষয়টি জানানোর পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এটি ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া ডাঙ্গারবিল এলাকা। এখানে যুগ যুগ ধরে বছরে কয়েক সনা চাষাবাদ হয়ে আসছে। গতবছরও চাষাবাদ ছিলো। কিন্তু রেল লাইনের রাস্তার কাজ শুরু হবার পর অতিলোভে বিলের মাটি কেটে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। তাও এক ফুট-দু’ফুট নয়, পুরো বিল প্রায় ৮-১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটা হয়েছে। বিলের উপরের অংশ পলি হলেও নিচে শুধু বালু আর বালু। পশ্চিম মাইজপাড়ার আবুল হাসেম সওদাগরের ছেলেরা এসব মাটি বিক্রি করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পশ্চিম মাইজপাড়ার মৃত আবুল হাসেম সওদাগরের ছেলে নাজির হোসেন, ছৈয়দ হোসেন ও নজিবুল হোসেন, একই এলাকার মৃত আব্বাস উদ্দিনের ছেলে আবু নাঈম মো. ইকবাল চৌধুরী ওরফে রিপু চৌধুরী এবং মাইজপাড়ার মৃত ইদ্রিস আহমদ চৌধুরীর ছেলে তাজবির জাহান চৌধুরী ওরফে সাকিল চৌধুরীর মালিকানাধীন জমি এগুলো। আর এসব মাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল এহেছান চৌধুরীর মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে।
সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সরকারি স্থাপনার পাশ থেকে এভাবে মাটি কাটা সমীচীন নয়। জমির মালিকদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। জমির মালিকদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ ধ্বংসের পথ সৃষ্টিকারক হিসেবে অভিযুক্ত করে ক্ষতিপূরণ দাবির মামলা করা হবে। দেয়াল ভাঙ্গলেও পার্কের ভেতরে থাকা প্রাণীকূল নিরাপদ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক ফরমান আলী জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা হতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম