আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না। এটা আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই। তবে সব আইনেই সাংবাদিকদের সুরক্ষার বিষয়টি রাখা হবে। তা ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত ‘শেপিং আ ফিউচার অব রাইটস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধে সরকার কাজ করছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমস্যা দূর করে এটাকে সর্বসাধারণ আইন করা হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কখনোই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করবেন না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়নি। এটা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য করা হয়েছে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করতে হবে, অন্যথায় এ আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হবে না। এভাবে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সম্পাদক পরিষদের সেমিনারে বলা হয়েছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট যখন করা হয়, তখন সম্পাদক পরিষদ ও অন্য যারা মতামত দিয়েছিলেন, তাদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। তাদের এমন বক্তব্য সঠিক নয়। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট যখন করা হয়, তখন আমার সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়। তবে যে পর্যায়ে এই আলোচনা হয়, তখন আইনটি পার্লামেন্টে চলে যায়। তখন আমি সাজেশন দিই এবং যেটা গৃহীত হয় সেটা হচ্ছে, সংসদীয় কমিটিতে যখন এ বিলটা নিয়ে আলোচনা হবে, তখন সেখানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং তাদের সংসদীয় কমিটিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তারা সেখানে বক্তব্যও দিয়েছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের যে প্রয়োজনীয়তা আছে, সেটাতে সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধিরা একমত হয়েছিলেন। উনারা বলেছিলেন, ২১ ধারার শাস্তি কমিয়ে আনার জন্য। তাদের বক্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেই ২১ ধারার শাস্তি কমিয়ে আনা হয়েছে। দ্বিতীয় কথা ছিল জামিন ও অজামিনযোগ্য বিষয়টি। অজামিনযোগ্য মানেই যে জামিন দেওয়া যাবে না, সেটা কিন্তু সঠিক নয়। আমি এটার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আইনে কিছু দুর্বলতা আছে। আমরা চেষ্টা করেছি সেগুলো দূর করার জন্য। এখনও আমরা সচেষ্ট আছি। আমরা সেটা করবো।’
টিআইবির আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, ইউনেসকোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুসান ভিজে, বাংলাদেশের জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লিউইস, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ ও বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্সান্দ্রা ভন লিন্ডে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ