বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা : দুর্নীতির মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এইচ বি এম ইকবালের স্ত্রী ও তিন সন্তানকে দেয়া সাজা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
আজ প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সাজা স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া রুল খারিজের মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি করেছেন।
নিম্ন আদালতে তিন বছরের সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, ডা. ইকবালের স্ত্রী মমতাজ বেগম, দুই ছেলে মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল ও মঈন ইকবাল এবং মেয়ে নওরীন ইকবাল।
আদালতে ডা. ইকবালের পরিবারের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও কামরুল হক সিদ্দিকী। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন, খুরশীদ আলম খান।
পরে দুদকের আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপিল বিভাগের এ আদেশের ফলে নিম্ন আদালতে তিন বছরের কারাদণ্ড পাওয়া ইকবালের স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক। তাদের গ্রেফতার করতে আইনগত কোনো বাধা নেই।’
দুদকের মামলায় ২০০৮ সালে ডা. এইচ বি এম ইকবাল, তার স্ত্রীসহ দুই ছেলে ও এক মেয়েকে সাজা দেন বিশেষ আদালত। ইকবাল নিম্ন আদালতে ২০১০ সালে আত্মসমর্পণ করেন এবং পরের বছর হাইকোর্ট তাকে খালাস দেন।
এই খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করেও দুদক ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও মেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। তবে হাইকোর্টে তাদের সাজার কার্যকারিতা স্থগিত হয়, যার মেয়াদ ২০১০ সালের নভেম্বরে শেষ হয়।
ছয় বছর পর নতুন করে স্থগিতাদেশ চাইলে গত ১৮ অক্টোবর বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ সাজা আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।
এরপর গত ১৫ নভেম্বর ওই চারজনের সাজার ওপর সর্বশেষ স্থগিতাদেশ স্থগিত চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক। ১৬ নভেম্বর চেম্বার জজ আদালত ১৮ অক্টোবরের স্থগিতাদেশটি স্থগিত করেন।
দুদক ২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এইচ বি এম ইকবাল পরিবারকে সম্পত্তির বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়। এরপর ২৭ মে মামলা করে। আর ২০০৮ সালের ১১ মার্চ বিশেষ জজ আদালত এ মামলার রায় দেন।
রায়ে এইচ বি এম ইকবালকে অসাধু উপায়ে সম্পদ অর্জনের দায়ে ১০ বছর, মিথ্যা সম্পদ বিবরণী দাখিলের কারণে আরও ৩ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে ৩ বছর করে কারাদণ্ড দেন এবং প্রত্যেককে জরিমানা করেন ১ লাখ টাকা।
রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এইচ বি এম ইকবালের পক্ষে হাইকোর্টে আপিল করেন তার ভাই এইচ বি এম শোয়েব রহমান। হাইকোর্ট ওই দিন রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
২০০৯ সালের ১৮ জানুয়ারি এইচ বি এম ইকবালের পক্ষে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। পরে তিনি জামিন পান।
ইকবাল মামলাটি নথিভুক্ত করার আবেদন করলে ২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর হাইকোর্ট গ্রহণ করেন।
ওই আবেদন গ্রহণের আদেশ বাতিল চেয়ে ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি দুদক আপিল করে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলামের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করেন।
আদালতের নির্দেশে এইচ বি এম ইকবাল ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। নিম্ন আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
বাংলা৭১নিউজ/এম