কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনা নতুন মাত্রা পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০ বিলিয়ন ডলারের ‘স্টারগেট’ প্রকল্প ঘোষণার পর। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের চলতি সম্মেলনে এ প্রকল্পের প্রভাব ও এআই নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান ডেমিস হাসাবিস, অ্যানথ্রোপিকের সহপ্রতিষ্ঠাতা দারিও আমোদেই এবং এআইর গডফাদার হিসাবে পরিচিত ইয়োশুয়া বেঞ্জিও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
হাসাবিস সতর্ক করে বলেন, এআই মানব বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা অপরাধী বা অপকর্মে লিপ্ত গোষ্ঠীর হাতে পড়লে সভ্যতার জন্য হুমকি হতে পারে। ওপেন সোর্স মডেলের সহজলভ্যতা এ উদ্বেগকে আরও বাড়িয়েছে। অন্যদিকে, অ্যানথ্রোপিকের আমোদেই এআইর সম্ভাব্য ব্যবহার নিয়ে কর্তৃত্ববাদী সরকারের প্রতি শঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, অন্যায় উদ্দেশ্যে এআই ব্যবহার মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। বেঞ্জিওর মতে, বিজ্ঞান এখনো এমন যন্ত্র নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি সক্ষম নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমাদের এ প্রযুক্তির পরিণতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।
তবে, মেটার প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন এ শঙ্কাকে দ্বিচারিতা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ওপেন সোর্স এআইর ওপর নিষেধাজ্ঞা বড় খেলোয়াড়দের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করবে। এআইর সুবিধা ও ঝুঁকি সমানভাবে মূল্যায়ন করার আহ্বান জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ‘স্টারগেট’ প্রকল্পের ঘোষণা দেন, যা এআই উন্নয়নে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। ওপেনএআই, সফটব্যাংক এবং ওরাকল যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রাথমিকভাবে ওপেনএআই এবং সফটব্যাংক প্রত্যেকে ১,৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো উন্নত কম্পিউটিং পাওয়ারের মাধ্যমে নতুন ও শক্তিশালী এআই মডেল তৈরি করা।
ওপেনএআইর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সারাহ ফ্রিয়ার বলেন, স্টারগেট প্রকল্প এআই উন্নয়নে একটি মাইলফলক হবে। স্টারগেট প্রকল্প যেমন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে, তেমনি এআইর ঝুঁকি ও নৈতিকতার বিষয়েও নতুন বিতর্ক উত্থাপন করেছে।
ডাচ প্রযুক্তি বিনিয়োগ গ্রুপ প্রসাসের প্রেসিডেন্ট এরভিন তু মনে করেন, লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলো শিল্পে বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম। তবে, এগুলোর ক্ষমতা ও ঝুঁকি সঠিকভাবে বোঝা জরুরি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ