বাংলা৭১নিউজ,মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিনের খৈয়ারভাঙ্গা হাফিজিয়া এতিমখানায় বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজ না পড়ে পাশের বাজারে একটি চায়ের দোকানে টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখার কারনে এতিমাখানার ৮ম শ্রেণীর দুই ছাত্র অলিদ ও নাজমুলকে বেত দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে অধ্যক্ষ। এ ঘটনায় আহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে এতিমখানা থেকে বের হয়ে পাশের বাজারে একটি চায়ের দোকানে টিভিতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ম্যাচের ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়েছিল একই এলাকার মৃত লিটন হাওলাদারের ছেলে নাজমুল ও শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামারা গ্রামের মওলানা মাইনউদ্দিনের ছেলে অলিদ।
১০ মিনিট খেলা দেখে বেডিং রুমে আসলেই এতিমখানার অধ্যক্ষ মাওলানা ওবাইদুল্লা বিন বাসার ডেকে নিয়ে এক একজনকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ২০-৩০টি বেত দিয়ে আঘাত করে । এতে গুরুতর আহত হয়ে পড়লে রাতে কাউকে জানাতে পারেনি দুই ছাত্র। শুক্রবার সকালে অলিদ ও নাজমুলের পরিবার বিষয়টি জানলে তারা এসে এতিমখানার ম্যানেজিং কমিটিসহ স্থানীয়দের বিষয়টি জানায় এবং এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করে।
ম্যানেজিং কমিটি বিচার করার আশ্বাস দিয়ে ঐদিন রাতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একটি সিদ্ধান্ত নেয় অধ্যক্ষকে আগামী তিন দিনের মধ্যে এই এতিমখানা ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই ঘটনা পর এতিমখানা ছেড়ে গাঁঢাকা দিয়েছে অধ্যক্ষ।
আহত ছাত্র অলিদ জানায়, আমি ১০ মিনিট খেলা দেখে রুমে যাওয়ার পরে হুজুর ডেকে নিয়েই বড় একটা বেত দিয়ে পিটাইতে থাকে ক্ষমা চাইলে আরো বেশী পিটাতে থাকে। আমাকে বেত দিয়ে ২০-৩০টি আঘাত করেছে। আমার দুই হাতে, পায়ে, পিটেসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করার ক্ষতসহ বিভিন্ন স্থানে ফুলে গেছে।
অলিদের বাবা মওলানা মাইনউদ্দিন জানান, একজন শিক্ষক শাসন করতে পারে, আমিও একটি মাদ্রাসার শিক্ষক, আমার মাদ্রাস অনেক দূরে হওয়ায় এখানে রেখে পড়াশুনা করতে দিয়েছে। তাই বলে এভাবে আঘাত করবে, এটা কোন ভাবেই ঠিক না। আমার এর বিচার চাই।
খৈয়ারভাঙ্গা হাফেজিয়া এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সাধারন সম্পাদক মো. মুজাহিরুল হক জানান, আমাদের কাছে অলিদের পরিবার অধ্যক্ষের বিচার চেয়েছে। আমরা ম্যানেজিং কমিটির সকলকে নিয়ে শুক্রবার রাতে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অধ্যক্ষ এতিমখানার সকল হিসাব বুঝিয়ে তিন দিনের মধ্যে এখান থেকে তাকে বিদায় দেয়া হবে। আর এই সিদ্ধান্ত না মানলে তাকে আইনের হাতে তুলে দেয়া হবে।
খৈয়ারভাঙ্গা হাফেজিয়া এতিমখানার অধ্যক্ষ মওলানা ওবাইদুল্লাবিন বাসার ফোনে নিজের দোষ শিকার করে বলেন, ঐ দুই ছাত্রকে এক আরবি শিক্ষক এশার নামাজ পড়তে নিয়ে গেলে তারা পিছন থেকে পালিয়ে একটি দোকানে গিয়ে টিভি দেখে। তাই তারা আসার পর তাদের শাসন করেছি। তবে শাসনটা একটু বেশী হয়ে গেছে। আমি আমরা ভুল শিকার করছি।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, এ রকম ঘটনা হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। তাছাড়া ভুক্তভোগীর পরিবার আমাদের কাছে অভিযোগ করলে মামলা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইস