বাংলাদেশে দুর্নীতি ও ব্রিটেনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট গ্রহণের অভিযোগে গেল কিছুদিন তীব্র সমালোচনার পর মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন লেবার পার্টির গুরুত্বপূর্ণ এমপি, ট্রেজারি ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। টিউলিপের পদত্যাগের ঘোষণার পর ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বাংলাদেশের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটেনে রাজনীতি করছিলেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলের অন্যতম মন্ত্রী ছিলেন তিনি। তবে দুর্নীতির অভিযোগে গত কিছুদিন ধরে নানামুখী চাপে ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। আর এই অবস্থায় টিউলিপ পদত্যাগ করায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের উচ্ছ্বসার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা।
নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুকে টিউলিপের পদত্যাগের একটি নিউজ নিজের পোস্টে শেয়ার করে তার ক্যাপশনে আসিফ নজরুল লিখেছেন, ইনশাআল্লাহ, আরও অনেক কিছু হবে!’
টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্রিটেনে এবং বাংলাদেশে দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট গ্রহণের অভিযোগে ব্রিটেনে তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। অন্যদিকে রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিত বাংলাদেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প থেকে অর্থ সরানোর অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত চলমান রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। এসবের মধ্যে দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল।
তারা বলছিল, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস টিউলিপকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো সত্য হলে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।
টিউলিপ সিদ্দিকের দায়িত্ব ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। অথচ তিনি নিজেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে গেছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে। কয়েকদিন বেশ চাপে থাকার পর এবার পদ ছাড়লেন তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ