বাংলা৭১নিউজ, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মাঠে মাঠে হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। দেখলেই সবারই মন ভরে যায়। তবে এবার বন্যা এবং টানা বর্ষণের কারণে গত বছরের চেয়ে সরিষার আবাদ কম হয়েছে। এমনি সরিষা থেকে বাম্পার ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষি বিভাগ এবং অনেক কৃষক।
সরেজমিন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা, বৈল্লা ও মাগুরহাটাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ শোভা পাচ্ছে সরিষার হলুদ ফুল। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর জমিতে কম সরিষার আবাদ লক্ষ করা গেছে।
কৃষকরা জানান, বন্যার ফলে এবার অনেকেই সরিষার আবাদ করতে পারেনি। যার কারণে বিভিন্ন এলাকায় সরিষার আবাদ কম হয়েছে। এছাড়া অনেক কৃষকই সরিষা থেকে বাম্পার ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন। আবার যারা আগে সরিষার আবাদ করেতে পেরেছে তারা ভালো ফলন পাবেন বলে জানা গেছে।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ সালে টাঙ্গাইল জেলার রবি মৌসুমে ১২টি উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছিল। সে বছর ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে ৪১ হাজার ২৭১ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হয়। কিন্তু এ বছর মাত্র ২৮ হাজার চারশ’ আট হেক্টর জমিতে সরিষার বীজ রোপণ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১১ হাজার হেক্টর কম।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ভাটচান্দা এলাকার লাল মিয়া বলেন, ‘গত বছর সরিষা চাষ করে আমরা বেশ লাভবান হয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর বৃষ্টির কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হতে পারে। এতে ভালো ফলন পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।’
গালা গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘এ বছর আমি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে সরিষা দেখে মনে হচ্ছে এবার ভালো ফলন হবে। আমি প্রায় ৫ বছর ধরে সরিষার আবাদ করি। প্রতিবছরই সরিষা ভালো ফলন হয়।’
তিনি আরো বলেন, বন্যার কারণে অনেকেই এবার সরিষার আবাদ করেনি। আমি কোনরকম আবাদ করে এখন ভালো ফলনের আশা করছি। এবার আমার প্রায় ৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এ বছর বাজারে সরিষার দাম বেশি, আবাদও কম হয়েছে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আবু আদনান বলেন, বন্যা এবং মাঠে পানি থাকার কারণে এ বছর সরিষা আবাদ কম হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কারণেও কৃষকরা বাম্পার ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তবে আমরা সার্বিকভাবে কৃষকদের পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করে থাকি। এ বছর কৃষকদের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করার জন্য সরকারিভাবে আমরা ধানের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করেছি বলে তিনি জানান।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস