বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিরোধের কারণে রাজধানীর বাড্ডায় চারটি হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজ অ্যন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।
আজ দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, মধ্যবাড্ডা আদর্শনগর এলাকার জনৈক জলিলের মালিকানাধীন স্টার গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকার দুটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ ছিল। এক পক্ষের নেতা বাউল সুমন মারা যাওয়ার পর অন্য পক্ষ উক্ত গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে গেলে বিরোধ পাকাপোক্ত হয় এবং হত্যার ঘটনা ঘটে।
এর আগে গতকাল শনিবার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের একটি দল অভিযান চালিয়ে বাড্ডা থানার আদর্শ নগর এলাকায় চারজনকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি জুয়েলসহ ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জুয়েল (২৮), মো. মোজহিদুল ইসলাম (২১), মো. সাফায়েত উল্লাহ ওরফে সোহাগ (২৬), মো. রাহাত হোসেন কাব্য (১৮), মো. ইকবাল আহম্মেদ রানা (২৩) ও মো. শাহ পরান হোসেন রাজু (২১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দুইট পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জুয়েল এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী। তার দেয়া তথ্য মতে, গুলশান ও বাড্ডা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার অন্য পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অস্ত্র গুলি উদ্ধার সংক্রান্তে উল্লিখিত আসামীদের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলার পাশাপাশি অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে বলে মনিরুল জানান।
গত বছর ১৩ আগস্ট বাড্ডার লিংক রোডের আদর্শনগরের ওয়াসার পানির পাম্পের পাশে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে ক্ষমতাসীন দলের চার নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শামসু মোল্লা ও স্থানীয় ক্লিনিকের ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ মানিক মারা যান। পরের দিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামা মারা যান। সর্বশেষ ওই ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে আবদুস সালাম মারা যান।
এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মাহবুবুরের বাবা মতিউর রহমান ১৪ আগস্ট বাড্ডা থানায় ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। গত বছর এই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হ। তাঁরা হলেন বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মো. ফারুক ওরফে মিলন (৪০) ও দলের কর্মী নূর মোহাম্মদ (৩০)। তাঁদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ কয়েক দিন আগে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস