র্যাবের হেফাজতে নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিন (৩৮) মারা গেছেন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে। মরদেহের ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
সোমবার (৩ এপ্রিল) ময়নাতদন্ত বোর্ডের প্রধান রামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। জেসমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। এরআগে রোববার বিকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ফরেনসিক বিভাগ থেকে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকালে নওগাঁ থেকে জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে নিয়েই র্যাব এ অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্নজনকে। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।
আটকের পর ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিলো। র্যাবের বরাত দিয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ বলেছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় পড়ে গিয়ে জেসমিন মাথায় আঘাত পান। আর চিকিৎসকদের বরাতে জানান, পড়ে যাওয়ার পর জেসমিনের মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়। এই কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও মৃত্যুর কারণ হিসেবে একই বিষয় উঠে এসেছে।
জেসমিনের মৃত্যুর পরদিন ২৫ মার্চ রামেকের মর্গে মরদেহের ময়না তদন্ত করা হয়েছিলো। র্যাব হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধমে প্রকাশ হলে হাইকোর্ট সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তলব করেন। আগামী বুধবারের মধ্যে পুলিশ হাইকোর্টে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
জেসমিনের মৃত্যুর কারণে র্যাবের কোন গাফিলতি আছে কি না তা তদন্ত করে দেখছে বাহিনীটি। এই ঘটনায় যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ভূমিকা নিয়েও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ