শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য ৯৪০ প্রশ্ন ভরিতে আরও ১৮৭৮ টাকা কমলো সোনার দাম সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান: ইসি আলমগীর টোল আদায়ে দুর্নীতি, দুদকের হস্তক্ষেপে ইজারা বাতিল রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : কাদের এপ্রিলে নির্যাতনের শিকার ১৯৩ নারী-শিশুকন্যা ৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মৃত ব্যক্তিদের জাল সনদ: মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত : তথ্য প্রতিমন্ত্রী যাত্রীবাহী বাস থেকে ৭টি স্বর্ণের বারসহ চোরকারবারি আটক আমন মৌসুম থেকেই চাল ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ করা হবে : খাদ্যমন্ত্রী টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১০ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের অভিযোগ আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে শনিবার থেকে খোলা স্কুল-কলেজ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা জমা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো ৪৯ টাকা শেয়ার ছাড়বে রূপালী ব্যাংক নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

জেলখানায় বন্দী মায়ের শিশুদের দিন কাটে কিভাবে?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ২৬ জুন, ২০১৭
  • ১৪৫ বার পড়া হয়েছে
একসাথে খেতে দেয়া হয় এই শিশূদের।

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে বন্দী মায়ের শিশুদের দিন কাটে কিভাবে তা নিয়ে বিবিসি বাংলায় একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে শায়লা রুখসানা। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়- বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে মোট বন্দীর সংখ্যা প্রায় আটাত্তর হাজার। যদিও ধারণ সংখ্যা মাত্র সাড়ে ছত্রিশ হাজার।

এর মধ্যে একটি বড় অংশই নারী বন্দী অর্থাৎ মোট বন্দীর ৩.৪ শতাংশ। এই নারী কয়েদীদের অনেকের সাথেই তাদের শিশু সন্তানরাও থাকছে কারাগারের উঁচু ফটকের ভেতরে।
বন্দী মায়েদের সাথে তারাও অনেকটা বন্দী দশায় থাকলেও, তাদের মানসিক বিকাশ কিংবা বিনোদনের কি ব্যবস্থা আছে কারাগারে?

কারাগারে শিশুর নামকরণ

মায়ের কোলে চারমাসের শিশু আরোহী। তার মা যখন নয়মাসের গর্ভবতী তখন সন্দেহজনক চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আসার কিছুদিন পর শিশুটির জন্ম। কারাগারের ভেতরে অন্য কয়েদীরাই তার নাম দিয়েছে আরোহী। চার বছরের আরও একটি শিশুসহ তার মা পুরান ঢাকার রেবেকা চারমাস ধরে কারাগারে বন্দী। রেবেকার স্বামীও আরেকটি মামলায় কারাভোগ করছে।

এরকম বহু নারী নানা ধরনের অপরাধের অভিযোগ মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার কারাগারগুলোতে বন্দী আছেন। আর তাদের অনেকের সাথেই কারা দেয়ালের ভেতরে বন্দী-জীবন শিশু সন্তানদেরও।

উল্লেখ করা দরকার এখানে প্রকৃত নাম ব্যবহার করা হচ্ছে না।

কেমন কাটে সময়?

ঢাকার কাশিমপুরে একমাত্র নারী কারাগারে সবচেয়ে বেশি শিশুর বসবাস। নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কারাগারটিতে ৪৭১ জন নারী কয়েদী রয়েছেন (সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে)।

আর সেখানে কারা দেয়ালের ভেতরে বন্দী থাকা মায়েদের সঙ্গেই আছে ৩১টি শিশু। এদের প্রত্যেকের বয়স ছয় বছরের কম। এইসব শিশুরা মায়েদের জন্য নির্ধারিত নারী কয়েদীদের ওয়ার্ডেই ঘুমায়। সারাদিন অবশ্য তাদের কাটে খেলার মাঠে, ডে কেয়ার সেন্টারে ঘুরে ফিরে।

কাশিমপুর কারাগারে কর্তৃপক্ষ এখানে তাদের পড়ানোর এবং অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রেখেছে। তবে সব কারাগারে শিশুদের জন্য এমন ব্যবস্থা নেই।
এখানেই বিশেষ সেলে বন্দী সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া নারী জঙ্গি সদস্যের সন্তানও রয়েছে।

“কোর্টে হাজিরার দিন ঈদের মত”

যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুইবছর আটমাস ধরে কারাগারে শারমিন । একটি শিশুকে নিজের মায়ের কাছে রেখে এলেও, একমাস বয়সী শিশুকে নিয়ে কারাগারে প্রবেশ। এরপর সেখানেই বড় হচ্ছে শিশুটি।

চলছে কারাগারের ডে কেয়ার সেন্টারে লেখাপড়া ।

চলছে কারাগারের ডে কেয়ার সেন্টারে লেখাপড়া ।

এই শিশুরা এতই ছোট এর বাইরে যে আরেকটি জগত আছে তা জানেনা অনেকেই। তারা যে কারাগারের ভেতর বন্দী অবস্থায় রয়েছে সেটি অনুধাবন করা তাদের পক্ষে এখনও সম্ভব নয়।
কারও কারও কাছে মায়ের জেলখানা থেকে কোর্টে হাজিরার দিনটিকেই মনে হয় যেন বেড়াতে যাওয়ার মত। একজন বন্দী নারী বলছিলেন তার মেয়ে তাকে বলে “মা কোর্টে কবে যাবা? কোর্টে হাজিরার দিন তার কাছে ঈদের মত”।

বিশেষ উৎসব এবং ঈদের দিন নতুন কাপড়-জামা পায় তারা।

জেল কোড অনুসারে কারাগারের ভেতরে থাকা কোনও শিশুর বয়স ছয় বছর পেরিয়ে গেলে তাকে বাইরে থাকা স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে হয়। আর যাদের কোনও স্বজন থাকে না, তাদের সরকারি শিশু পরিবারে পাঠানো হয়।

আর ছয় থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সী কোনও শিশুকে কারাগারে রাখা হয় না।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, এইসব শিশুর অন্য কোনও নিরাপদ আশ্রয় নেই বলেই বন্দী মায়েদের সাথে থাকছে। “সেখানে কর্তৃপক্ষ শিশুদের স্বার্থেই তাদের রাখছে। তবে তাদের মানসিক বিকাশ যেন কারা ফটকের ভেতরেও চলতে পারে সেজন্য কিছু কিছু উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে”। বলছিলেন কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার সাজাহান আহমেদ।

বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে যে পরিমান বন্দীদের চাপ তার কারণে অন্য অনেক জেলাতে কারাগারের ভেতর নারী বন্দী কিংবা তাদের শিশুদের জন্য এখনও পর্যাপ্ত বিনোদনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। অনেকসময় কয়েদী নারীদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটিও হয় । সেসবও চাক্ষুষ করতে হয় এই শিশুদের কখনো কখনো।

জেলখানায় খেলাধুলায় ব্যস্ত শিশুরা জানেনা তারা কোথায় আছে। কিন্তু সমাজে গ্রহণযোগ্যতা আর ভবিষ্যত নিয়ে আশঙ্কায় মায়েরা।

আর এই শিশুরা কারাগার থেকে বের হওয়ার পর সমাজে তাদের কতটা সহজভাবে গ্রহণ করা হবে সে প্রশ্ন ভাবায় বন্দী মায়েদেরকেও। মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নরসিংদীর নাছিমা যেমনটা বলছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে এত বিশাল সংখ্যক কয়েদী সামলানোর পর তাদের মুক্তির পর সন্তানদের ভবিষ্যত বিষয়ে ফলোআপ করা তাদের পক্ষে সহজ কাজ নয়।

‘এই শিশুদের নিয়ে কাজের অভাব আছে’

এই শিশুরা বন্দী মায়েদের সাথে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তাদের সমাজে খাপ খাইয়ে নিতে, বিশেষ পরিচর্যা কিংবা কাউন্সিলিং এর সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগের অভাব রয়েছে। বিষয়টি স্বীকার কারা মহপরিদর্শক বলেন এধরনের উদ্যোগ কেউ নিলে তাতে সহায়তা দেবেন তারা।

এই শিশুরা কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তাদের সমাজে খাপ খাইয়ে নিতে, বিশেষ পরিচর্যা কিংবা কাউন্সিলিং এর সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগের অভাব রয়েছে। বিষয়টি স্বীকার কারা মহপরিদর্শক বলেন এধরনের উদ্যোগ কেউ নিলে তাতে সহায়তা দেবেন তারা।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি বাংলা/এসএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com