অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যার মামলাগুলো নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান প্রসিকিউটরের বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ অনুরোধ করেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি ক্যাডম্যান বসনিয়া, কসোভো, রুয়ান্ডা, ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইউক্রেন নিয়ে কাজ করেছেন।
জুলাই গণহত্যার বিচারের জন্য ঢাকা কীভাবে হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে জড়িত করবে, সাক্ষাতে সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়। বাংলাদেশের ন্যায়বিচার চাওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও ভূমিকা এবং দায়িত্ব নিয়েও আলোচনা হয়।
আলোচনায় উল্লেখ করা হয়, বিদেশি রাষ্ট্র কর্তৃক পলাতক আসামিকে রক্ষা, পরিপূরকতার নীতির অধীনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে সহযোগিতা, অপরাধীদের পূর্ণ জবাবদিহি করার জন্য দুটি প্রতিষ্ঠানকে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা উচিত।
বিগত বছরগুলোতে শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত নৃশংসতা, বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সংঘটিত নৃশংসতার বিচার নিশ্চিতের কাজ করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (আইসিটি)। আইনি কাঠামো এবং বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় এ সাক্ষাতে। টবি ক্যাডম্যান আইসিটি আইনি এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোতে সংশোধনের পরামর্শ দেন।
মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি, ন্যায্যবিচার এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করার জন্য সাক্ষ্যের পদ্ধতিগত নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস আইসিটি প্রসিকিউশন টিমের কাজের প্রশংসা করে বলেন, ন্যায্যবিচার এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য তাদের অবশ্যই সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জুলাই নৃশংসতা হেগভিত্তিক আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গত মাসে রিপোর্ট করেছে গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন (শেখ হাসিনা) সরকারের আসল চেহারা উন্মোচন করে একটি দুর্দান্ত কাজ করেছে। এখন আমাদের অবশ্যই দোষীদের জবাবদিহি করতে হবে এবং ন্যায়বিচার প্রদান করতে হবে।
সভার শেষে প্রফেসর ইউনূস ক্যাডম্যানকে আর্ট অব ট্রায়াম্ফ : গ্রাফিতি অব বাংলাদেশস নিউ ডন— বইটির একটি কপি উপহার দেন, যা নতুন যুগে বাংলাদেশি জনগণের আশা এবং স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ