বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: নগরীর জুরাইন-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ীতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট চলছে। ওয়াসার পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পানি সরবরাহ করলেও সে পানিতে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। এ কারণে পানি সরাসরি পান করতে পারছেন না বসিন্দারা।
দোলাইপারের বাসিন্দা রাহেলা খাতুন বলেন, ওয়াসার পানিতে সারা বছরই দুর্গন্ধ থাকে। গরমের সময়ে দুর্গন্ধের মাত্রা বাড়ে। বৃষ্টি হলে পানিতে ময়লার পরিমাণ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এ পানি কখনোই সরাসরি পান করতে পারি না।
পানি ফোটানোর পর তা ঠাণ্ডা হলে তারপর আবার পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রে দিলে তবেই পান করার যোগ্য হয়। এ ধরনের পানি পান করতে আমরা অভ্যস্ত হলেও আত্মীয়-স্বজন এলে প্রথমে তারা এ পানি পান করতে পারেন না। তখন পাম্প থেকে জারের পানি কিনে আনতে হয়।
যাত্রাবাড়ীর নবীনগর এলাকার বাসিন্দা রাসেল হোসেন বলেন, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানির চাহিদাও বাড়ছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী পানি পাওয়া যাচ্ছে না। খাওয়ার পানি তো নাই।
এমনকি গোসল ও অন্যান্য কাজের জন্যও বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নেই। আর সবসময় পানি কিনে প্রয়োজন মেটানোর সামর্থ্য অনেকেরই নেই। এসব এলাকায় পানি যা আসছে তাতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বেশি।
হাতে পানি নিয়ে দেখা গেল পানি কিছুটা লালচে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানিতে দুর্গন্ধের পাশাপাশি পানি লালচে বর্ণ ধারণ করে পানের উপযোগিতা নষ্ট হয়ে গেছে। তা দিয়ে গোসল করার ফলে চুলকানি, চর্মরোগসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন এখানকার বাসিন্দারা।
মিরহাজীরবাগের বাসিন্দা মাশুরা আক্তার বলেন, সাধারণত ওয়াসার পানি কলসে ফুটিয়ে তারপর তা পান করি। বেশ কিছুদিন ধরে পানি ভালোভাবে ফুটালেও দুর্গন্ধ থেকেই যাচ্ছে। দুর্গন্ধ কিছুটা নালার পানির মতো।
তাই এখন জারের পানিই ভরসা। প্রতিটি জার ত্রিশ টাকা করে কিনি। তাছাড়া এ পানি গোসল করার জন্যও নিরাপদ নয়। গোসলের পরপরই শরীর লালচে হয়ে ওঠে। চুল আঠালো হয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াসার এক কর্মী বলেন, পানিতে দুর্গন্ধ হওয়ার নানা কারণ থাকতে পারে।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল অবৈধ লাইন। অদক্ষ লোকেরা পাইপ ফুটো করে এসব সংযোগ অবৈধভাবে বাসাবাড়িতে দেয়। এসব ফুটো দিয়ে ওয়াসার পানিতে ময়লা ঢোকে। লাইনে পানির প্রবাহ কম থাকলে সেই ছিদ্রপথে পয়োবর্জ্যসহ বাইরের ময়লা ঢুকে পড়ে। আর তখনই পানিতে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়।
ওয়াসা মডস জোন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিন বলেন, গরমে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানির চাহিদা বেড়ে যায়। আগে এ সময়টায় পানি সংকট ছিল। তবে এখন সংকটের পরিমাণ কম।
পানিতে দুর্গন্ধ কমানোর জন্য অবৈধ লাইন বন্ধসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা এটা করছি।
বাংলা৭১নিউজ/এস.এম