জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নতুন প্রশাসনিক ভবনে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব ছবি নামিয়ে ফেলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি সংস্কার এবং দেশের সব অফিস থেকে শেখ মুজিবের ছবি অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কার্যালয়গুলো ঘুরে ঘুরে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলেন তারা। এ সময় নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষ এবং সিনেট হলে থাকা ছবিও নামিয়ে ফেলেন তারা।
ছবি নামানোর সময় তাদের ‘মুজিববাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘মুজিববাদের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘মুজিববাদের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকটি অনুষদ এবং আবাসিক হলগুলো থেকে অতিদ্রুত বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলার হুঁশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘খুনি শেখ হাসিনা যে আদর্শকে পুঁজি করে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টের জন্ম দিয়েছিল, তার ভগবান ছিল ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা শুরু থেকে দাবি জানিয়ে আসছিলাম, বাংলাদেশে এ ফ্যাসিস্ট মুজিববাদের ঠিকানা হবে না। মুজিবের ওপর ভিত্তি করে যে ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল তা ভেঙে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে মুজিববাদকে মুছে ফেলা হয়েছে। এ জন্য আমরা বলেছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথায়ও মুজিবের চিহ্ন রাখা যাবে না। তারই ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনকে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদের চিহ্ন মুক্ত করেছে।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকাল তিনটায় ভর্তি পরীক্ষায় বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি সংস্কার ও দেশের সকল অফিস থেকে শেখ মুজিবের ছবি অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাবি শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ ব্যানারে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা দুই দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যায্য উপাচার্য কোটা বাতিল করা ও পোষ্য কোটাসহ অন্যান্য কোটায় সংস্কার আনতে হবে এবং সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিতসহ সব প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্যাসিস্ট আইকন শেখ মুজিবের ছবি অপসারণ করতে হবে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে কোটা পদ্ধতি কখনোই বাতিল চাই না। তবে এর সুষ্ঠু সংস্কার করতে হবে। একই সঙ্গে উপাচার্য কোটা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া সারাদেশে সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্যাসিবাদী মুজিবের ছবি অপসরণের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবের ছবি ফ্যাসিবাদী আইকনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা না নামানো হলে আমরা মনে করছি, গণঅভ্যুত্থানের যে ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা তা কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে