আজ ১২ ভাদ্র জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ঢাবি কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
তাছাড়া, শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
কবি নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন।
নজরুল বাংলা ভাষা সাহিত্য অনুরাগীদের কাছে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি কবিতা, সংগীত, উপন্যাস, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ, চলচ্চিত্রে নিজের অবদান রেখেছেন। ছিলেন সাংবাদিক, গায়ক ও অভিনেতা। সংগীতে তার অনবদ্য অবদান এখনো তারার মতো উজ্জ্বল।
প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল।
লেখকদের মধ্যে তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ। তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে ঢাকায় আনা হয়। তাকে দেওয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা।
বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাবির বিশেষ সমাবর্তনে কবিকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধি দেওয়া হয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি কবি একুশে পদকে ভূষিত হন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ