বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটাই বারাক ওবামার শেষ ভাষণ। এ ভাষণে নিরাপত্তাহীন বিশ্ব-বাস্তবতায় বিভিন্ন দেশের মধ্যে সমন্বয় ও ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে চলমান জাতিসংঘের ৭১ তম সাধারণ অধিবেশনের বার্ষিক বিতর্কে সকালের সেশনে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এই আহ্বান জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্তমান মেয়াদের শেষ প্রান্তে রয়েছেন বারাক ওবামা। এবারের অধিবেশনেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাধারণ পরিষদে বিদায়ী ভাষণ দেন।
মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তাহীনতার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয়ের আহ্বান জানান ওবামা। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক শরণার্থী সংকট এবং বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায় একটি নতুন কর্মপদ্ধতি গ্রহণের ওপরও জোর দেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অগ্রগতি এবং এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন ওবামা। তবে এসময় তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিচ্যুতির কথাও স্বীকার করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসান হওয়ার পর আমরা একটি শতাব্দীর এক-চতুর্থাংশ সময় পেরিয়ে এসেছি। নানা দিক থেকে পৃথিবী এখন আগের তুলনায় কম সহিংস। আগের চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ।’
যুক্তরাষ্ট্রকে মানব-ইতিহাসের এক বিরল পরাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের সংকীর্ণ স্বার্থের বাইরে চিন্তা করতে সক্ষম হয়েছে। ভালো কিছুর জন্য বলপ্রয়োগ করেছে। এ মুহূর্তে বিশ্ব শান্তির হুমকি হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার এবং জিকা ভাইরাসের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ অঞ্চল নিয়েও কথা বলেন ওবামা। তিনি এ সংক্রান্ত তর্ক-বিতর্কের চেয়ে এর শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রুশ জাতীয়তাবাদ এবং রাশিয়ার প্রতিবেশীদের বিষয়ে মস্কোর হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেন ওবামা। তিনি বলেন, ‘এর ফলে রাশিয়ার মর্যাদা খর্ব হবে। তার সীমানা কম নিরাপদ হবে।’
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের এবারের অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের ১৩৫ জন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এতে চলমান নানা বৈশ্বিক সংকট নিরসনে আলোচনা করবেন। এ বছর জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের বিতর্কে দুনিয়ার নানা প্রান্তে চলমান সংঘাত, চরম দারিদ্র্য, ক্ষুধা, শরণার্থী সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলবেন বিশ্বনেতারা।
সূত্র: জাতিসংঘের ওয়েবসাইট, দ্য টেলিগ্রাফ।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস