জাল সনদে চাকরি, এরপর জালিয়াতি করে অঢেল সম্পদের মালিক জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেন। এইচএসসির জাল সার্টিফিকেট দেখিয়ে চাকরি নিয়েছিলেন দেলোয়ার। সেই সার্টিফিকেটে বাবার নামের স্থানে আনেন পরিবর্তন। এছাড়া হুটহাট জাগৃকের নথি হারানো বা গায়েব হওয়া, নথি আটকিয়ে রাখা বা না পাওয়া- এমন সব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার শত শত অভিযোগ রয়েছে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে সংস্থাটির সজেকা-১ এ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন তার বিরুদ্ধে। আসামির বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৪০৬, ৪০, ৪৭ এবং ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০০৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হিসাব সহকারী হিসেবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে যোগদান করেন দেলোয়ার। ওই পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পাস হতে হবে। আবেদনের সময় তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশংসাপত্র দাখিল করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে। চলতি বছরের ১ আগস্ট আটকের পর স্বীকারও করেন সেটি ।
তিনি চাকরি নেওয়ার সময় কোনো সনদপত্র দাখিল করেননি। এ বিষয়ে অভিযোগ আসলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় তদন্ত শুরু করে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করে জাগৃক কর্তৃপক্ষ। পরে তা তফসিলভুক্ত হওয়ায় এ নিয়ে কাজ শুরু করে দুদক।
মামলার এজহারে আরো বলা হয়, জাতীয় গৃহায়নের কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসামি মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথমে ৭-৮ বছর ভাউচারভিত্তিক পাম্প অপারেটর হিসেবে মোহাম্মদপুরে গৃহায়নের একটি পানির পাম্পে চাকরি করতেন।
পরে একই নামে এইচএসসির জাল সনদ সংগ্রহ করে দাখিল করেন হিসাব সহকারী হিসেবে স্থায়ী চাকরিতে যোগদানের জন্য। ২০০৯ সাল থেকে জাগৃকের সাবেক চেয়ারম্যান নিয়াজ উদ্দিন মিয়ার মাধ্যমে ভূমি শাখায় অফিস সহকারী পদে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তখন থেকে মোহাম্মদপুর, মিরপুর এবং চট্টগ্রাম এলাকা সম্পূর্ণ জুরিসডিকশনের দায়িত্ব পালন করেন।
আসামি পরে অবৈধভাবে হিসাব সহকারী পদ থেকে ট্র্যাক পরিবর্তন করে উচ্চমান সহকারী পদ দখল করেন। মো. দেলোয়ার হোসেন লালমাটিয়ার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে বসবাস করলেও তার নামে সরকারি বরাদ্দকৃত কোয়ার্টার ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। মোহাম্মদপুরে
ঝামেলাপূর্ণ প্লট সমূহের জালিয়াতির সঙ্গেও জড়িত তার নাম।
আসামির বিরুদ্ধে ফাইল আটকে রেখে, ফাইল গায়েব করে, সেবাগ্রহীতাদের জিম্মি করে তাদের থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুস আদায় করার নানাবিধ অভিযোগও রয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি করে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ