সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ইসলামী ব্যাংকের সচেতনতা বিষয়ক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত ‘দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চায় কানাডা কুমিল্লায় বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম তদারকির নির্দেশনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসেবার আওতাধীন খাতে ইউজার ফি আদায়ে নীতিমালার সুপারিশ ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সহজলভ্য উৎস খোঁজার তাগিদ প্রতিমন্ত্রীর বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত সুইজারল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন স্পিকার জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল না হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: আইজিপি টেকসই উন্নয়নে সময়োপযোগী আর্থিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ইশরাক ১৬ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে পালানোর সময় জনতার হাতে ধরা পুলিশ কর্মকর্তা কঙ্গোতে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা বাবাকে খুঁজে পেতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপির মেয়ে ডিবিতে কালশী ট্রাফিক বক্সে আগুন দিলো অটোরিকশাচালকরা কমলাপুর আইসিডি’র নিয়ন্ত্রণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নিতে সুপারিশ ভোট কম পড়ার বড় ফ্যাক্টর বিএনপি : ইসি আলমগীর অভিবাসী কর্মীদের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করছে সরকার

ছয় নির্বাচন ধরে ভোট বেড়ে চলছে আ.লীগের

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর প্রথম নির্বাচনে ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগ যত ভোট পেয়েছে, তার প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনেই আগেরবারের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ ছয়টি জাতীয় নির্বাচনেই আওয়ামী লীগে ভোট বাড়ছে।

এমনকি যে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরেছে, সেখানেও ভোট বেড়েছে তাদের। আগামী নির্বাচনে এই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকলে আবার জিতে ক্ষমতায় আসতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ভোট আগেরবারের তুলনায় দুইবার কমেছে। আর দুটি নির্বাচনে আগেরবারের চেয়ে ভোট বেড়েছে। সবশেষ বিএনপি যে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, সেখানে তারা যত ভোট পেয়েছে, তার চেয়ে ভোট ২৫ শতাংশ না বাড়লে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসা দলটির জন্য কঠিন হয়ে যাবে।

১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৭৩ শতাংশ ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। তবে ১৯৭৫ সালে দলের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দলের শীর্ষ চার নেতাকে কারাগারে হত্যা করা হয়। এরপর প্রথমে খন্দকার মোশতাক আহমেদ এবং পরে সেনাশাসক জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দলটিকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে বাধা দেন।

আর জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে অনায়াসে জিতে যায় তার গঠন করা দল বিএনপি। তখন তারা ভোট পায় ৪১.২ শতাংশ। আর বিপর্যয়ে পড়া আওয়ামী লীগের বাক্সে পড়ে ২৪.৫ শতাংশ।

এই নির্বাচনের পর থেকেই আওয়ামী লীগের ভোট বাড়ছে নিয়মিত। আর বিএনপির ভোট উঠানামা করছে। তবে ১৯৭৯ সালে তারা যত ভোট পেয়েছে, পরের অংশগ্রহণমূলক একটি মাত্র নির্বাচনেই এই পরিমাণ ভোট পায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গোবিন্দ চক্রবর্তী বলছেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছে কিন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের অবস্থান জনগণের কাছে সবসময় থাকে। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে বিরূপ পরিস্থিতিতে হয়ত তাদের ভোট কমেছে। কিন্ত দলটি তখন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করে আর সেনাশাসনের অবসান হওয়ার পর দলটি তার বক্তব্য নিয়ে মানুষের কাছে গেছে আর মানুষও সাড়া দিয়েছে।

জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সেনা শাসনের সময় নানা অপপ্রচারের কারণে আওয়ামী লীগকে যেসব প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে দুইবার ক্ষমতায় আসার পর সেসব প্রশ্ন উঠছে না। আবার এখন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে অন্য শাসনের তুলনাও হচ্ছে এবং এটিও আওয়ামী লীগের পক্ষে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই শিক্ষক।

কোন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কত ভোট

১৯৭৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে ২৪.৫ শতাংশ ভোট পাওয়া আওয়ামী লীগ এরশাদ শাসনামলে ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের বারের চেয়ে দুই শতাংশ বেশি ভোট পায়। যদিও ওই নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তখন ২৬.২ শতাংশ ভোটে ৭৬টি আসনে জয়ী হয় নৌকা মার্কার প্রার্থীরা।

১৯৮৯ সালে চতুর্থ সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আওয়ামী লীগ। আর আন্দোলনের মুখে পরের বছরের ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন সেনা শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট পড়ে মোট ৩১.৩ শতাংশ। তখন আওয়ামী লীগ আসন পায় মোট ৮৮টি। আর নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়া জোটের শরিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি আসন পায় পাঁচটি।

অর্থাৎ ১৯৮৬ সালের তুলনায় এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট বাড়ে ৫.১ শতাংশ।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে আওয়ামী লীগ। আর ওই বছরের জুনেই আরও একটি নির্বাচন হয় যাতে জিতে ১৯৭৫ সালের পর প্রথম সরকার গঠন করে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া দলটি।

এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট পায় মোট ৩৭.৪৪ শতাংশ আর আসন পায় ১৪৬টি। অর্থাৎ আগের নির্বাচনের চেয়ে দলটির ভোট বাড়ে ৬.১৪ শতাংশ।

পাঁচ বছর পর ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সার্বিকভাবে হেরে যায় আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে চারদলীয় জোট ভোটে জিতে সরকার গঠন করে।

তবে এই নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের ভোট বাড়ে ২.৫৮ শতাংশ। তখন নৌকা প্রতীকে ভোট পড়ে ৪০.০২ শতাংশ আর দলটি আসন পায় ৬২টি।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের ভোট বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। আগের বারের চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ বেশি ভোট পায়  তারা। এর বাইরে নৌকা প্রতীকে জাসদের প্রার্থীরা ০.৬ এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ০.৩ শতাংশ ভোট পায়।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩০টি আসন আর তার শরিকরা পায় ৩২টি আসন।

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়নি বিএনপি জামায়াত জোটের নির্বাচন বর্জনের কারণে। এই নির্বাচনে ১৫৩ আসনে প্রার্থীরা জিতে যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আর বা আসনে যত ভোট পড়ে তার ৭৯.১৪ শতাংশ পড়ে নৌকা প্রতীকে, আসন পায় ২৩৪টি।

বিশেষজ্ঞ মত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গোবিন্দ চক্রবর্তী ঢাকাটামসকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অর্জনের কতগুলো মাইলফলক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। দলটি দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন করেছে। সবচেয়ে বড় কথাহলো মানুষ আওয়ামী লীগের উপর আস্থা রাখতে সক্ষম হয়েছে।’

‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছিলো তখন কিছু অর্জনের পদচিহৃ রেখে যেতে পেরেছিল। যেগুলো মানুষ ধারণ করেছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ পাহাড়ের সমস্যা সমাধান করেছিল, গঙ্গা ব্যারেজ চুক্তি এবং বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিল।’

২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে হারলেও পরেরবার বিএনপির শাসনামলের পর দুই সরকারের মধ্যে তুলনা করেই ভোটাররা ২০০৮ সালে ভোট দিয়েছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই শিক্ষক। আর এ কারণে আওয়ামী লীগ ব্যাপকভাবে ভোট পায় বলে মনে করেন তিনি।

গোবিন্দ বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে এর পিছনে মূল কারণ হলো তার আগের শাসন আমলের কারণে তাঁর উপর মানুষের ভরসা তৈরি হয়েছে।’

১৯৭৫ সালের পর বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে ক্ষমতাসীনরা ব্যাপকভাবে বলতে থাকে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ ভারত হয়ে যাবে। আবার ব্যাপকভাবে বলা হতে থাকে আওয়ামী লীগ ইসলামবিরোধী। এমনকি তারা ক্ষমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি বাজবে বলেও বক্তব্য আসে বিএনপির পক্ষ থেকে।

গোবিন্দ চক্রবর্তী মনে করেন, দুইবার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ এই দুটি প্রশ্নের জবাব দিতে পেরেছে তার কাজের মাধ্যমে। আর এ কারণে এখন আর এই আক্রমণের মধ্যে পড়তে হচ্ছে না দলটিকে। পাশাপাশি উন্নয়ন এবং জনকল্যাণমূলক বেশ কিছু প্রকল্প দিয়েও দলটি তার নতুন সমর্থক গোষ্ঠী তৈরি করতে পেরেছে। এটিও তার ভোট ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলার কারণ।

বাংলা৭১নিউজ/জেড এইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com