বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ছাত্রলীগকে আওয়ামী লীগ গুণ্ডামির চেতনায় গড়েছে-অভিযোগ বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাড়াটে বাহিনী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্রলীগের মন শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রঙ্গে রাঙ্গানো। এই সময়ের ছাত্রলীগ প্রকৃত কোন ছাত্র সংগঠন নয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর ভাড়াটিয়া বাহিনী। এদের মধ্যে নেই জ্ঞানের আলো, শিক্ষার আদর্শ, সহমর্মিতা ও সহিষ্ণুতা। প্রতিবাদের আওয়াজকে গুঁড়িয়ে দিতেই গুণ্ডামির চেতনায় এদেরকে তৈরি করা হয়েছে।
রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি নেতা।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামা সংগঠনের কয়েকজন নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদ করে রিজভী বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। বেছে বেছে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে।’
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে তামাশা ও প্রতারণা বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি নেতা।
‘আমরা ইতোপূর্বে বলেছিলাম-শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেয়াটা ছিল প্রধানমন্ত্রীর তামাশা। সমগ্র জাতি এখন সেই রঙ-তামাশার দৃশ্য অবলোকন করছে। মূলতঃ প্রধানমন্ত্রী সেদিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছেন।’
ছাত্রলীগের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শিক্ষাঙ্গনকে বাকশালী খাঁচায় বন্দী করার জন্যই বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রলীগকে তৈরি করা হয়েছে আতঙ্কের অপর নাম হিসেবে।’
‘শিক্ষাঙ্গণের গণতন্ত্রবিরোধী, বিপজ্জনক শক্তি হচ্ছে ছাত্রলীগ। বর্তমানে খুন, জখম, হাঙ্গামা, হল দখল, সিট বাণিজ্য, শিক্ষক-ছাত্রছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে বর্তমান ছাত্রলীগ। আর সেজন্যই পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগও নেমে পড়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্ষতবিক্ষত করতে।’
প্রচণ্ড ব্যথায় অস্থির খালেদা জিয়া
কারান্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতিরও দাবি করেন রিজভী। বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় রেখে তাঁর শারীরিক অবস্থাকে এক অমানবিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে বর্তমান সরকার। গতকাল দেশনেত্রীর স্বজনরা তাঁর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন, সেখানে তার শারীরিক অবস্থা দেখে তারা বেদনাহত ও ব্যথিত হয়েছেন।’
‘ইতিপূর্বে দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত এমনকি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার সুচিকিৎসার জন্য যে পরামর্শ দিয়েছিলেন সেটির বিন্দুবিসর্গও পালন করা হয়নি। বরং সুচিকিৎসার দাবি করাটাও যেন দেশনেত্রীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার একটা মওকা পেয়ে গেছে। তাকে চিকিৎসা না দিয়ে তার অসুস্থতাকে চরম অবনতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।’
ঘাড় ও বাম হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত, কোমর হতে বাম পায়ের তলা পর্যন্ত প্রচণ্ড ব্যথায় খালেদা জিয়া অস্থির হয়ে আছেন বলেও দাবি করেন রিজভী। বলেন, ‘অস্ত্রোপচারকৃত দুটি চোখই ধূলাকীর্ণ স্যাঁতসেতে পরিবেশে দিনকে দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
‘বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সরকার প্রধানের আচরণ লজ্জাজনকভাবে নিম্নরুচির। বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বারবার দাবি করা সত্ত্বেও সরকারের এড়িয়ে যাওয়াতে মনে হয় দেশনেত্রীকে বন্দী করে হাতের মুঠোয় নিয়ে কোন অশুভ মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরীন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, টাঙ্গাইল বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম তোফা প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সৌজন্যে: ঢাকাটাইমস।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস