বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হবার সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছাবে। বাঙ্গালী বীরের জাতি, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে জানে। বঙ্গবন্ধর নেতৃত্বে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দু’টি উদ্দেশ্য নিয়ে সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন, একটি হলো- বাংলাদেশকে স্বাধীন করা, অপরটি হলো বাঙ্গালী জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করে গেছেন, আজ তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তির পথে সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবার একধাপ এগিয়ে যাওয়া তারই প্রমান। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করতে তৈরী পোশাক শিল্পে শিশুশ্রম বন্ধ এবং রপ্তানিতে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আজ পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরী পোশাক রপ্তানি কারক দেশ। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। যে সকল দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিশ্ববাণিজ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতি বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (২২ মার্চ) ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল আয়োজিত ‘এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশন এন্ড কমপেটেটিভনেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে-২-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন। ২৩টি দাতা দেশ, ৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ৪৭টি স্বল্পোন্নতদেশ নিয়ে ১৯৯৭ সালে এ অংশীদারী মূলক প্রোগ্রাম শুরু হয়। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৩ লাখ মার্কিন ডলার।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের রপ্তানির শিংহ ভাগ আসে তৈরী পোশাক রপ্তানি করে। শুধু একটি পণ্যের উপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণ করতে হবে। এ জন্য সরকার ইতোমধ্যে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দেশের রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাজার সম্প্রসারণের উপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশের আইসিটি খাত, ঔষধ শিল্প, জাহাজ নির্মাণ, কৃষিপণ্য রপ্তানি, চামড়া জাত পণ্য রপ্তানিরমতো বেশ কিছু রপ্তানি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করলেও আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত এলডিসি ভুক্ত দেশের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবার পরও ইউরোপিয়ন ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে জিএসপি প্লাস নামে বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। বিশ্ববাণিজ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার যোগ্যতা অর্জন করবে। তখন বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন-২০২১ সফলতার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশ। যারা একসময় বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করে বলেছিল, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি। বিশে^র মধ্যে বাংলাদেশ হবে দরিদ্র দেশের রোল মডেল। আজ ৪৬ বছর পর তারাই বলছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করতে জাতিসংঘের দেয়া তিনটি শর্তই পূরণ করেছে, অর্থাৎ যোগ্যতা অর্জন করেছে। ফলে বাংলাদেশ প্রাথমিক ভাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে, মর্মে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। চুড়ান্ত পর্যায় অতিক্রম করবে ২০২৪ সালে। এরপরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৭ পর্যন্ত বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত দেশের সকল বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসুর সভাপতিত্বে জাতিসংঘে নিযুক্ত এক্সক্লুসিভ সেক্রেটারিয়েট ফর ইআইএফ-এর নির্বাহী পরিচালক রত্মাকর অধিকারী, বিএফটিআই-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাবেক সচিব আলী আহমেদ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভিসি বিজয় ভট্রাচার্য্য, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. মুনীর চৌধুরী।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস