বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সিরিয়ায় আসাদপন্থিদের ‘অতর্কিত হামলায়’ ১৪ নিরাপত্তা সদস্য নিহত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার, দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন আট-নয় তলার নথিপত্র সব পুড়ে গেছে বলে ধারণা ফায়ার ডিজির পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম

চুয়াডাঙ্গায় খেজুরগুড়ের মৌসুম শুরু, ব্যাস্ততা বাড়ছে গাছিদের

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৭
  • ৫৭৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, নুরুল আলম বাকু চুয়াডাঙ্গা থেকে: চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে ক’দিন ধরে ভারি বৃষ্টি ও ভ্যাপসা গরমের পর কয়েকদিন থেকে শুরু হয়েছে ভোরের দিকে মাঝারি ধরনের কুয়াশ্।া সেইসাথে রাতের ভাগে অনুভুত হচ্ছে হালকা শীতের আমেজ। দিনের বেলায় এখনও মাঝে মধ্যে আকাশে দেখা মিলছে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের আনাগোনা। দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় চুয়াডাঙ্গায়ও শুরু হয়েছে খেজুরগুড়ের মৌসুম। জেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে মধুবৃক্ষ খেজুরগাছ থেকে রস আহরনের প্রস্তুতি। এরই অংশ হিসেবে গাছিরা বর্তমানে খেজুর গাছের ডেগো পরিস্কার, দা তৈরী, দড়ি কেনা ও ভাড় (কলস) কেনা, রস জ্বালানোর তাওয়া কেনা, চুলা তৈরির স্থান নির্বাচন করাসহ রস সংগ্রহ ও খেজুরগুড় তৈরির নানা আয়োজনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই গ্রামবাংলার গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষকে ঘিরে জেলার গ্রামীন জনপদে শুরু হবে এক উৎসব মুখর পরিবেশ। মধুবৃক্ষ থেকে গাছিরা মিষ্ট সংগ্রহ করবে। এ সুমিষ্ট খেজুর রস জ্বালিয়ে তৈরী হবে গুড় ও পাটালি। আর হেমন্তের নতুন ধান ওঠার সাথে সাথে উপজেলার প্রতিটি গ্রামীন জনপদে শুরু হবে চালের আটা আর নলেন গুড় ও রসের তৈরি নানারকম পিঠা-পায়েসের উৎসব। আর গ্রামবাংলায় এ উৎসবের আমেজ চলবে পুরো হেমন্ত ও শীতকাল জুড়ে।
এক সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা ছিল খেজুর রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনের অন্যতম প্রসিদ্ধ স্থান। এখনও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলতো বটেই তাছাড়াও দেশের বাইরেও চুয়াডাঙ্গার খেজুরগুড়ের বেশ কদর রয়েছে। তবে বর্তমানে নানা প্রতিকুলতায় খেজুর গুড়ের এ ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। গ্রাম বাংলার সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক এ খাতে সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় বর্তামানে আগের মত আর রস, গুড় উৎপাদন হয় না। জেলার নির্দিষ্ট কিছু গ্রাম ছাড়া সুঘ্রাণ নলেন গুড় পাওয়া যায় না। তা আবার চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত কম। ফলে শীত মৌসুমে যে রস, গুড় ও পাটালী তৈরী হয় তা নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রীতিমত কাড়াকাড়ি শুরু হয়। ইতোমধ্যেই শহরের লোকজন গ্রামের গাছিদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন। আবার কেউ কেউ গাছিদের নিকট অগ্রিম টাকা তুলে দিচ্ছেন ভাল রস, গুড় ও পাটালী পাওয়ার আশায়। অগ্রিম টাকা পেয়ে অনেক গাছি কিনছেন রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির জন্য নানা উপকরণ।
গত কয়েক বছর বাজারে গুড়ের চেয়ে চিনির দাম কম থাকায় বেশি লাভের আসায় অনেক অসাধু গাছি খেজুর রস থেকে গুড় তৈরির সময় তাতে চিনি মিশিয়ে ভেজাল করে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। ফলে অনেকেই এ ভেজাল গুড় কিনে আসল গুড়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সেইসাথে বেশি দামে এসব ভেজাল গুড় কিনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন আর্থিকভাবেও। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর চিনির দাম বেশি থাকায় হয়ত ভেজালমুক্ত গুড় পাওয়া যাবে এমন অভিমত অনেকের।
জেলার শ্যামপুর গ্রামের গাছি আঃ লতিফ ও তারিনীপুরের আশাদুল বলেন, এলাকায় আগের মতো আর খেজুরগাছ তেমন নেই। তাই খেজুর গুড় তৈরি করে আগের মত আর লাভ হয় না। তবুও বাড়তি উপার্জনের আশায় অন্যান্য কাজের ফাঁকে একাজ করি। জয়রামপুর গ্রামের গাছি খোরশেদ আলি বলেন, আমি প্রায় ২০/২৫ বছর যাবৎ খেজুর গাছ কাটছি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গ্রামের বিভিন্ন্ মাঠে প্রায় ২শ’ খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছি। চলছে খেজুর গাছ ঝোড়া ও চাছা-ছোলার কাজ। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করি আর দিন দশেক পর থেকেই এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু করা যাবে। তবে এ কাজে আগের মতো এখন আর ভাল লাভ হয় না। আগে এলাকার সব মাঠে ও গ্রামের আনাচে কানাচে খেজুর গাছ ছিল। বর্তমানে খেজুর গাছ দিয়ে ইট ভাটায় ইট পোড়ানোর ফলে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক খেজুর গাছ নিধন হচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় খেজুরগাছ লাগানো হচ্ছে না। তাই খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় এখন বেশি রস পাওয়া যায় না। গাছের অভাবে অনেক গাছিই এ কাজ ছেড়ে দিয়েছে।
জেলার দামুড়হুদা উপজেলার সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেকইে আবাদি জমির আইলে খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই তাদের কৃষি জমির আইলে খেজুরগাছ রোপন করতে শুরু করেছেন। আশা করা যায় আগামী দশ বারো বছর পর থেকে এসব গাছ হতে প্রচুর রস, গুড় ও পাটালি পাওয়া যাবে।
জেলার প্রবীনদের অনেকেই জানান, খেজুর গাছ আবাদি জমির তেমন কোনো ক্ষতি করে না। তাই আবাদি জমির চারি আইলে খেজুরগাছ রোপন করা যায়। বিভিন্ন স্থানের অধিকাংশ খেজুর গাছই অযতœ আর অবহেলায় বেড়ে ওঠে। আবাদি জমি ছাড়াও সড়কপথ, রেলপথ, পুকুরপাড়, বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অফিস আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের ফাঁকা জায়গায় প্রচুর খেজুর গাছ লাগানোর সুযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা একটু উদ্যোগী হলেই বিপুল সংখ্যক খেজুরগাছ রোপনের মাধ্যমে দেশে গুড়ের চাহিদা পুরণ করে এ গুড় বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com