বাংলা৭১নিউজ,(যশোর)প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগরে টাকা চুরির অপবাদে রাকিব মোল্যা (১২) নামের অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত রাকিবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতনকারীরা পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে রবিবার অভয়নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। বর্ণী-বিছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাকিব মোল্যা উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের মালাধরা গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইসরাফিল বিশ্বাসের ছেলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত রাকিব জানায়, শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় মালাধরা বাজারে লিটনের দোকানের সামনে বসে ভাজা খাচ্ছিলেন। এ সময় একই ইউনিয়নের কোদলা গ্রামের মহর মোল্যার দুই ছেলে জাহিদুল (চায়ের দোকানি), কেরামুল ও জলিল মোল্যার ছেলে মুরাদ তাকে জোর করে রাস্তার পাশে জাহিদুলের চায়ের দোকানের মধ্যে নিয়ে যায়। এরপর জাহিদুল লাঠি দিয়ে তাকে মারপিট শুরু করে আর বলে, ‘আমার দোকান থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা চুরি করেছিস, সেই টাকা দিতে হবে’।
‘আমি টাকা চুরি করিনি’ এ কথা বলার পর ওরা আমাকে দোকানের পাশে মেহগনি গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করতে থাকে। খবর পেয়ে আমার বাবা এগিয়ে আসলে ওই টাকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়। কিসের টাকা জানতে চাইলে আমার বাবাকেও ওরা তাড়িয়ে দেয়। এরপর মুরাদ একটি ব্লেড দিয়ে আমার বাম হাতে পোঁচাতে থাকে আর টাকা চুরির কথা স্বীকার করতে বলে। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লে অনেক রাতে আমাকে আমাদের বাড়ির সামনে ফেলে রেখে চলে যায় ওরা।
রাকিবের বাবা ইসরাফিল বিশ্বাস জানান, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেলেকে উদ্ধার করতে না পেরে রাতে স্থানীয় পাথালিয়া ক্যাম্প পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পর মধ্যরাতে ছেলেকে বাড়ির সামনে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি বিধায় পরদিন রবিবার দুপুরে উপজেলার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বিকালে অভয়নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। বিনা কারণে তার ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে তিনি নির্যাতনকারী তিন যুবকের বিচার দাবি করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কোদলা ও মালাধরা গ্রাম পাশাপাশি। আর এই দুই গ্রামে ওই তিন যুবকের অবাধ বিচরণ। তারা এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক কারবার করে থাকে। ওদের কারণে এলাকায় মাদকসেবীর সংখ্যা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে বেড়ে চলেছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম মাহমুদুর রহমান রিজভী রাকিবের বিষয়ে বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এক হাতে ব্লেড দিয়ে পোঁচানো হয়েছে। চিকিৎসা চলছে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, শিশু ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্যাতনকারীদের আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
অভিযুক্ত নির্যাতনকারীদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলা৭১নিউজ/পিআর