বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশে চিকুগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রধান যে জটিলতা দেখা দেয়, তা হচ্ছে শরীরে তীব্র ব্যথা। এ জন্য অনেকেই পরবর্তী সময়ে ফিজিওথেরাপি নিতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু চিকুনগুনিয়ায় ফিজিওথেরাপি নেয়া উচিত না অনুচিত তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
এরই মধ্যে চিকুনগুনিয়ার ব্যথা উপশমে ফিজিওথেরাপি সেবা নিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন হটলাইন চালু করেছে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ও পর্যবেক্ষণকারী সরকারি সংস্থা আইইডিসিআরের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের জ্বর কমার পর সাধারণত তিন মাস পর্যন্ত ফিজিওথেরাপি নেয়ার প্রয়োজন হয় না।
কারণ জ্বর থাকা অবস্থায় এ ধরনের থেরাপি হিতে বিপরীত হতে পারে। এরপরও ব্যথা না কমলে প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি নেয়া যেতে পারে শুধু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
আইইডিসিআরবি’র সাবেক পরিচালক ড. মাহমুদুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, এ ধরনের ব্যথা ছয় মাস বা তার বেশি সময় ধরে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওষুধ দিয়েই প্রাথমিকভাবে ব্যথা কমানোর ব্যবস্থা করা হয়। ফিজিওথেরাপি অনেক পরের ধাপ।
তবে তিন মাসের আগে ফিজিওথেরাপি দেয়া উচিত নয়- আইইডিসিআরের এমন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ফিজিওথেরাপি কার্যক্রমের সমন্বয়ক ডা. ইয়াসমিন আরা ডলি।
তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, যারা বলছে তিন মাসের আগে ফিজিওথেরাপি দেয়া যাবে না তারা তো আবার বলছে বরফ সেক দেয়ার কথা। তো আইসথেরাপি কি এক ধরনের থেরাপি নয়? এটা হাইড্রোথেরাপি। তিনি বলেন, তারাও তো হালকা ব্যায়ামের কথা বলছেন। তাহলে তারা বিতর্ক কেন তৈরি করছেন জানি না।
তাদের বলা উচিত ছিল, থেরাপির বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ডা. ইয়াসমিন বলেন, আজও একজন রোগী দেখে এলাম যিনি আড়াই মাস ধরে ভুগছেন। এখনও বিছানা থেকে নেমে টয়লেটে যেতে তার সাহায্য নিতে হয়। তাকে আমরা আইসথেরাপি এবং হালকা ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি বলেন, অনেকেই আছেন তীব্র ব্যথার কারণে হাঁটাচলা করতে পারছেন না। কাজে ফিরতে পারছেন না। তাদের কাজে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই এই ফিজিওথেরাপি কার্যক্রম।
তবে একেবারে জটিল পর্যায়ে গেলে তখন আরও ব্যাপকভাবে ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন বলে জানান ইয়াসমিন আরা।
উল্লেখ্য, এডিস মশাবাহিত চিকুনগুনিয়ার ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার জ্বরের প্রকোপ দেখা যায়। সঙ্গে প্রচণ্ড ব্যথাও থাকে। জ্বর কমার পর ব্যথা কমাতে তিন মাস পর্যন্ত রোগীকে হালকা ব্যায়ামের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে প্যারাসিটামল খাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস