‘ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়’ কথাটি সত্যি প্রমাণ করে দেখালেন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লা। দীর্ঘ চার বছর চেষ্টার পর অবশেষে বিমান তৈরিতে সফলতা পেয়েছেন তিনি। বিমান উড্ডয়নের কোনো জ্ঞান না থাকলেও নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েছেন। ইচ্ছা পূরণের সঙ্গে সফল হয়েছে তার দীর্ঘদিনের পরিশ্রমও।
জুলহাসের তৈরি বিমানটি দেখতে শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় যমুনা নদীর চরে নানা বয়সী হাজারো মানুষ ভিড় করেন। জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার মোল্লার উপস্থিতিতে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরের দিকে যমুনার চরে জুলহাস তার তৈরি বিমান আকাশে উড্ডয়ন করেন। এ সময় তিন দফায় প্রায় তিন মিনিটের মতো সময় আকাশে উড়েছেন তিনি।
জুলহাস মোল্লার বাড়ি জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায় হলেও নদী ভাঙনের কারণে বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটগর তেওতায় পরিবারসহ বসবাস করেন। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর এলাকায় বি কে এস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পরে আর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে। ২৮ বছর বয়সী যুবক জুলহাস চুক্তিভিত্তিকভাবে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন।
জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা বলেন, ছোটবেলা থেকেই জুলহাস প্লাস্টিকের জিনিসপত্র কাটাকাটি করে কিছু বানানোর চেষ্টা করতো। ওর চেষ্টা আজকে সফল হয়েছে। গত চার বছর ধরে চেষ্টা করার পর আজ ওর বানানো বিমান আকাশে উড়েছে। প্রতি বছরই যমুনার চরে উড্ডয়নের চেষ্টা করে। এবার সফল হয়েছে। জুলহাসের গবেষণা করার ইচ্ছে আছে।
উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লা বলেন, রিমোট কন্ট্রোল বিমান বানিয়ে আকাশে ওড়ানোর পর থেকে ইচ্ছা জাগে নিজে বিমান তৈরি করে আকাশে উড়বো। এই চিন্তা থেকেই বিমান তৈরি জন্য গবেষণা শুরু করি। তিন বছর গবেষণা আর এক বছর বিমান তৈরি করতে লেগেছে। দীর্ঘ চার বছরের পরিশ্রমের পর আজকে আমি সফল হয়েছি। নিজের তৈরি করা বিমানে নিজেই পাইলট হয়ে আকাশে উড়েছি।
তিনি বলেন, বিমানটি তৈরি করতে আমার প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিমান তৈরির জন্য মালামাল ক্রয় করেছি। বিমানের সেভেন হরস পাওয়ারের একটি মোটর পাম্প ও নিজের তৈরি করা পাখা ব্যবহার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, জুলহাসের গবেষণা কাজে সরকার সহযোগিতা করবে। প্রাথমিকভাবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করে তাকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/একেএম