বাংলা৭১নিউজ,নাজিম বকাউল,ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় এ বছর জয়িতা সম্মামনা পেয়েছেন চার নারী। পারিবারিক সফলতা, সমাজ উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সাফল্য ও শিক্ষাসহ চাকুরী ক্ষেত্রে অসামান্য অবাদানের জন্য জয়িতা সম্মামনা দিয়েছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। এসব জয়িতারা হলেন-উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের সবদার মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের কোহিনুর আক্তার (৩৮), চরহরিরামপুর ইউনিয়নের ইন্তাজ মোল্যার ডাঙ্গী গ্রামের মোসাঃ সাহিদা বেগম (৪৫), চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের বালিয়া ডাঙ্গী গ্রামের রহিমা বেগম (৩৫) ও একই ইউনিয়নের বাছার ডাঙ্গী গ্রামের ঝর্ণা খাতুন (৪৮)।
জানা যায়, জয়িতা কোহিনুর আক্তারের প্রায় ২০ বছর আগে বিয়ে হয়। স্বামীর সংসারে অভাব অনটনের মধ্যে দিন কাটানোর পরও তিনি লেখাপড়া চালিয়ে যান। পরবর্তিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি সহশিক্ষক পদে চাকুরী লাভ করেন। এখন তিনি সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিক করে চলেছেন। তার এক ছেলে সরকারি মেডিকেল কলেজে ডাক্তারী পড়ছেন এবং আরেক মেয়ে এ বছর এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছেন।
জয়িতা রহিমা বেগম গত ১০ বছর আগে আর্থিকভাবে খুব অস্বচ্ছল ছিলেন কিন্ত বর্তমানে স্বচ্ছল। তার নিজস্ব দুই একর জমি আছে। সে নিজে জমিগুলো দেখাশুনা করে বিভিন্ন প্রকার সব্জি ও ফসল উৎপাদন করে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। তার তিনটি মেয়ে। সবগুলো সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং বর্তমানে পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব ভাল।
জয়িতা সাহিদা বেগম সমাজ উন্নয়নে অসাধারন অবাদান রেখে চলেছেন। অষ্টম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত থাকা অবস্থায় ছাত্র জীবনে তার বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পরে অনেক চেষ্টা করেও লেখাপড়া করতে পারেননি। তাই জীবনে লেখাপড়ার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া জন্য বিয়ের পর থেকে তিনি সমাজ গড়ার সংগ্রামে নেমে পড়েন। সমাজে যেখানেই বাল্যবিয়ের সম্ভাবনা থাকে সেখানেই প্রতিবাদী হয়ে কাজ করছেন। সমাজ সেবায় অসামান্য অবাদানের জন্য উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়ন থেকে মহিলা সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করেন এলকাাবাসী। একই সাথে তিনি উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
জয়িতা ঝর্ণা বেগম একজন সফল জননী। তিনটি কন্যা সন্তান রেখে প্রায় ১২ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়। স্বামীহীন সংসারে চরম দৈন্যতায় পড়েন তিনি। সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। তবুও ঘরে বসে হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল ও সব্জি চাষ করে কোনো মতে দিন কাটাতে থাকেন জয়িতা ঝর্না বেগম। এরই মধ্যে তিনি সবক’টি মেয়েকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলেন। বড় মেয়ে মিনারা আক্তারকে এস.এস.সি পাশ করার পর বিয়ে দেন। মেঝ মেয়ে জলি আক্তার চরভদ্রাসন সরকারি কলেজে বি.এ. পড়ছেন। ছোট মেয়ে নিলা আক্তার একই কলেজে এইচ.এস.সি. পড়ছেন। এছাড়া তার একক প্রচেষ্টায় স্বামীর ভিটের কুড়ে ঘর পাল্টিয়ে তিনি চৌচালা টিনের ঘর গড়েছেন এবং সমাজ উন্নয়নে বিভিন্ন অবাদানের জন্য ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এরাকাবাসী তাকে মহিলা সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস