মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
বাংলাদেশ অলআউট ১৪৬ রানে, ভারতের লক্ষ্য ৯৫ দুই কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার, ব্যয় ১২৮৯ কোটি টাকা জাহাজে ৩ জনের মৃত্যু : জমে থাকা গ্যাসেই বিস্ফোরণ সাংবাদিক হাসান মাহমুদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাবেক মন্ত্রী গাজী সাবেক উপমন্ত্রী জ্যাকবকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদ ৩৩ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে বদলি সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম গ্রেপ্তার আমি কোনো কিছুই ভুলতে চাই না: সামান্থা র‍্যালি নিয়ে ‘নীরব এলাকা’ ঘুরলেন পরিবেশ উপদেষ্টা ভারতের বিপক্ষে প্রথম ফিফটি করেই আউট সাদমান আজ থেকে সুপারশপে বন্ধ হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করলো ইসরায়েল গাজীপুরে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট আমাদের একটি নতুন দেশ নির্মাণ শুরু করতে হবে : ড. ইউনূস সুনামগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু একদিনেই লেবাননে ৯৫ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল চাকরির বয়স ৩৫ আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদল যমুনায় অটোমেটেড সেবা প্রতিরোধ করবে অপচয় ও দুর্নীতি : অর্থ উপদেষ্টা নেপালে বন্যা-ভূমিধসে ১৯২ মৃত্যু, উদ্ধারে হিমশিম আমরা প্রস্তুত, দীর্ঘ যুদ্ধেও বিজয়ী হবো: হিজবুল্লাহর উপপ্রধান

চট্টগ্রামে বন্যায় নিহত ১৬, ক্ষয়ক্ষতি ১৩৫ কোটি টাকার বেশি

চট্টগ্রাম প্র্রতিনিধি
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ডুবে চট্টগ্রামে অন্তত ১৬ জন নিহত। এ সময় ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব মিলিয়ে ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলার।

সোমবার রাত থেকে তিন দিন কার্যত পানির নিচে ছিল ওই সব এলাকা। টানা তিন দিন বন্ধ বিদ্যুৎ। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হলেও এখনো অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়নি বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন সিনিয়র কর্মকর্তা মো: সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার। গত দিন দিন আমরা খাবার বরাদ্দ দিয়েছি। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে মোট এক হাজার ১৯৩টি।’

বুধবার থেকে পানি কমতে শুরু করায় বিভিন্ন এলাকায় নৌকাডুবে ও স্রোতের টানে ডুবে নিখোঁজ হওয়া অনেক নারী-পুরুষ-শিশুর লাশ ভেসে উঠে।

বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় তিন উপজেলা ও মহানগরীতে মোট ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসন মৃত্যুর এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সাফুল্লাহ মজুমদার জানান, এখন পর্যন্ত বন্যায় চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে তিনজন। নিহতদের মধ্যে সাতকানিয়ায় সাত, লোহাগাড়ায় চার, চন্দনাইশে দুই, বাঁশখালীতে এক, রাউজানে ও এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর একজন।

চন্দনাইশেও একজন নিখোঁজ থাকার কথা জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন।

তবে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘সাতকানিয়া উপজেলায় ছয়জন নিহত ও তিনজন নিখোঁজ ছিল। বুধবার বিকেলে নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে একজনের লাশ পাওয়া গেছে। এখন নিহত মোট সাতজন ও নিখোঁজ দুইজন।’

সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকালে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ও পদুয়া এলাকা থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন কলেজছাত্র সাকিব ও অটোরিকশাচালক আব্দুল মাবুদ। এদিন সাতকানিয়ায় পাওয়া যায় আরো চারটি লাশ। তারা হলেন সাতকানিয়া পৌরসভার সাকিব, ইদ্রীস, বদিউল আলম ও আব্দুর রহীম।

এর আগে সোমবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ড ইসলামিয়াহাট বাদামতল এলাকায় জলাবদ্ধ সড়কে ডুবে মৃত্যু হয় কলেজছাত্রী নিপা পালিতের।

পরদিন লোহাগাড়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পানিতে তালিয়ে এক বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রের মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র জুনায়েদ ইসলাম জারিফ (২২) বেসরকারি বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এরপর বুধবার একই উপজেলায় ভেসে ওঠে কৃষক আসহাবের লাশ।

একই দিন সাতকানিয়ায় শিশু জান্নাতুল ফেরদৌস, হেলাল, সোভা কারণ এবং চন্দনাইশে আবু সৈয়দ ও আনাস নামে দাদা-নাতির লাশ ভেসে উঠে।

এদিন ভোরে রাউজানের হালদা নদী থেকে শাহেদ হোসেন বাবু নামের এক তরুণ উদ্যোক্তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সোমবার বিকেলে রাউজানে মৎস্য খামার থেকে ফেরার পথে নৌকাডুবে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও গত শনিবার বাঁশখালীতে অতিবৃষ্টির কারণে দেয়াল ধসে মিজবাহ নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে তিন দিন ধরে বিদ্যুৎহীন পুরো সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকা। এতে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটসহ নানামুখী সমস্যায় পড়ে সেখানকার বাসিন্দারা। তবে বুধবার রাত থেকে এসব এলাকার পানি নেমে যাওয়া সাপেক্ষে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করেছে।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাতকানিয়া ছাড়া দক্ষিণের সব উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। সাতকানিয়ায়ও কাজ চলছে, দ্রুতই সংযোগ দেয়া যাবে বলে আশা করছি।’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলায় ছয় লাখ ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে ছয় হাজার ৭৫৩ জনকে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি আগস্ট মাসের গত সাত দিনে ৬৬৪ মিলিমিটার (মিমি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ আগস্ট ৪২ দশমিক ৮ মিমি, ৫ আগস্ট ৬৪ দশমিক ২ মিমি, ৬ আগস্ট ২৩১ দশমিক ৫ মিমি এবং ৭ আগস্ট ২১৬ দশমিক ৪ মিমি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে দক্ষিণের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া ও আনোয়ারা এবং উত্তরের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকার পরিমাণ বেশি।
সূত্র : ইউএনবি

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com