বাংলা৭১নিউজ, চট্রগ্রাম: চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার সকাল সাতটার দিকে নগরের জিইসি মোড়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এসপির সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। বাবুল আক্তারের স্ত্রীর নাম মাহমুদা খাতুন (৩২)। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলের বয়স সাত বছর, মেয়ের চার বছর।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মাহমুদাকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করে মোটরসাইকেলে আসা তিন দুর্বৃত্ত।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ জানান, বাবুল আক্তারের বাসা নগরের ওআর নিজাম রোডে। তাঁদের ছেলে নগরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে পড়ে।
সকালে ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যাচ্ছিলেন মা মাহমুদা। বাসার কাছাকাছি জিইসি মোড়ের ওয়েল ফুডের সামনে মোটরসাইকেলে আসা তিন দুর্বৃত্ত তাঁকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মাহমুদার লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজামউদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে জঙ্গি দমনে বাবুল আক্তার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি অনেক জঙ্গি ধরেছেন। এ কারণেই তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, বাবুল আক্তার গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) থেকে পুলিশ সুপার (এসপি) পদে পদোন্নতি পেয়ে ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টারে বদলি হন। এর আগে তিনি সিএমপির নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দেন তিনি। তাঁর কর্মস্থল এখনো নির্ধারিত হয়নি।
বাবুল আক্তার স্বপরিবারে নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় বসবাস করতেন। চট্টগ্রামে জঙ্গি দমনসহ শীর্ষ অপরাধী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বেশ আলোচিত ছিলেন তিনি।
এদিকে মা হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ছয় বছর বয়সী ছেলেটি বলছে, মোটরসাইকেলে যারা এসেছিল, তারা প্রথমে তাকে একপাশে সরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর একজন তার মায়ের পেটে ছুরি মারে এবং পরে গুলি করে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বশির আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে তারা তিনটি অব্যবহৃত গুলি ও একটি গুলির খোসা পেয়েছেন। গুলিটি লেগেছে মাহমুদার মাথার বাঁ পাশে।
শারমীন আক্তার নামের এক প্রতিবেশী জানান, মাহমুদা প্রায়ই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা বলতেন। বলতেন, ওই বাসা সবাই চিনে গেছে, বাসা বদলে ফেলতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/আরএম