ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আতঙ্ক ও খরার কারণে গাছের আধাপাকা লিচু পেড়ে ফেলছেন নড়াইলের ব্যাপারীরা। এরই মধ্যে প্রায় ৭৫-৭৫ শতাংশ লিচু পেড়ে ফেলা হয়েছে।
নড়াইল সদরের আউড়িয়া ইউনিয়নের পংকবিলা, লস্করপুর ও আউড়িয়া গ্রাম ‘লিচুর গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত। এ তিনটি গ্রামে প্রায় অর্ধশত লিচুবাগান রয়েছে। প্রতিটি বাগানে ১০-১৬০টি পর্যন্ত গাছ রয়েছে। লিচুচাষ করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এক বা একাধিক লিচুগাছ রয়েছে। সবমিলিয়ে এ তিনটি গ্রামে প্রায় দেড় হাজার লিচুগাছ রয়েছে।
পংকবিলা গ্রামের লিচু ব্যাপারী রিপন মোল্যা, স্বপন ও সৌরভ মালো মালো জানান, এবার লিচুর ফলন ভালো। দেশের বিভিন্ন জেলায় নড়াইলের লিচুর চাহিদা রয়েছে। তবে শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় লাভ একটু কম হচ্ছে।
লিচুশ্রমিক লস্করপুর গ্রামের বাদশা মোল্যা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে আউড়িয়া, লস্করপুর ও পংকবিলা গ্রামের প্রায় ৭৫ শতাংশ দেশি আধাপাকা লিচু বিক্রি হয়ে গেছে।
কথা হয় বাগান পরিচর্যাকারী হাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবছর সাত লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। তবে বাজারে লিচুর দাম রয়েছে। আশা করছি ১৩ লাখ টাকার বেশি লিচু বিক্রি করতে পারবো।
লিচুচাষি কামরুজ্জামান খান তুহিন বলেন, বর্তমান তার সাড়ে ছয় একরের বাগানে ১৬০টির মতো মোজাফ্ফর, চায়না-৩ ও দেশি লিচুগাছ রয়েছে। বাগানের সব লিচুই ফরমালিন বা বিষমুক্ত। এবার ১০ লাখ পিস শুধু দেশি লিচুই বিক্রির আশা করছেন।
তিনি বলেন, ফলন ভালো হলেও খরা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে কিছু লিচু পেড়ে ফেলা হচ্ছে। তবে মোজাফ্ফর ও চায়না লিচু পাকতে সময় নেবে।
মধুমতি ও পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় অন্যবারের তুলনায় এবার দ্বিগুণ লিচু যাচ্ছে চট্টগ্রাম, ঢাকা, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলায়। এছাড়া যশোরসহ আরও কয়েকটি জেলায় লিচু বিক্রি হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, এবছর ৬০ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ হয়েছে। এবার ফলন এবং দাম ভালো হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় মোখা আতঙ্কে এবং অতিরিক্ত খরায় অনেক চাষি আধাপাকা লিচু পাড়ার খবর পেয়েছি। তবে তাদের অপরিপক্ক লিচু না পাড়তে নিষেধ করা হচ্ছে। খরায় ফলন বাঁচাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ