বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: সামাজিক কাজের চাপে নিদারুণ ঘুম সংকটে রয়েছে বিশ্ববাসী। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজকের বিশ্বে সাধারণভাবে মানুষ পর্যাপ্ত ঘুমের সময় পাচ্ছে না। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় নেদারল্যান্ডসের মানুষ রাতে এক ঘণ্টা বেশি ঘুমায়। তালিকায় এরপরই রয়েছে জাপান ও সিঙ্গাপুরের মানুষ।
এছাড়া সাধারণভাবে পুরুষের তুলনায় নারীরা একটু বেশি ঘুমায়। সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী মানুষের ঘুমানোর প্যাটার্ন নিয়ে করা মার্কিন এক গবেষণায় এসব তথ্য ওঠে এসেছে। একটি অ্যাপস থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে এ গবেষণা করা হয়। গবেষণা নিবন্ধটি সায়েন্স অ্যাডভান্সেস নামে একটি জার্নালে শুক্রবার প্রকাশিত হয়।
শনিবার বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটির গণিতবিদরা মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে বিশ্বের ১০০টি দেশে এ গবেষণা চালিয়েছেন। গবেষকদের মতামত, তাদের এ গবেষণার ফল বিশ্বব্যাপী ঘুম সংকট মোকাবেলায় কাজে লাগবে। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মানুষের জেট ল্যাগ (দীর্ঘ ফ্লাইটের পরে অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং অন্যান্য শারীরিক প্রভাব) কাটাতে ২০১৪ সালে ‘ইনট্রেন’ নামে একটি অ্যাপস চালু করে। অ্যাপসটির ব্যবহারকারীরা গবেষক দলের সঙ্গে তাদের ঘুমানোর তথ্যও শেয়ার করেন।
গবেষণায় দেখা যায়, জাপান এবং সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা গড়ে প্রতি রাতে সাত ঘণ্টা ২৪ মিনিট ঘুমায়। আর নেদারল্যান্ডসের নাগরিকরা ঘুমায় ৮ ঘণ্টা ১২ মিনিট। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা ৮ ঘণ্টার চেয়ে একটু কম ঘুমায়, যা ফ্রান্সের নাগরিকদের তুলনায় একটু কম। এগুলো বিভিন্ন দেশের গড় ঘুমের পরিমাণ। গবেষণায় বলা হয়েছে, নারীরা পুরুষদের চেয়ে রাতে ৩০ মিনিট বেশি ঘুমান। বিশেষ করে ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী লোকরা। আর যেসব লোকজন সূর্যের আলোতে বেশি কাজ করেন তারা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন।
গবেষকদের একজন অধ্যাপক ড্যানিয়েল ফোর্জার বলেন, আমাদের মনের চাহিদা সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা। আর শরীরের চাহিদা হচ্ছে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা। তিনি বিবিসিকে বলেন, সমাজ আমাদের দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের দেহঘড়ি চেষ্টা করছে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠাতে। এর মধ্যবর্তী সময়ের ঘুম বিসর্জন দেয়া হচ্ছে। যার কারণে আমরা মনে করি, বিশ্বব্যাপী ঘুম সংকট চলছে। তার মতে, আমাদের গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকার ইচ্ছা এবং দেহের সকাল সকাল ওঠার ইচ্ছার মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব রয়েছে।
অধ্যাপক ফোর্জার আরও বলেন, ঘুম বয়সেও একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় ঘুমানোর বিষয়টি লক্ষ করা গেছে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে। সেই তুলনায় বয়স্ক লোকদের মধ্যে ঘুমের পরিমাণ অনেক কম। যারা রাতে কাজ করেন তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ঘুমের বিঘ্নতার কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে।
বাংলা৭১নিউজ/সি