আপনি কী একজন শুদ্ধ মানুষ হতে চান? তাহলে পথ চলার ক্ষেত্রে কিছু শুদ্ধাচার মেনে চলুন। আর তা যদি আপনি পারেন, তবে দেখবেন চমৎকার এক জগতে প্রবেশ করেছেন। শুদ্ধ হওয়া বিষয়টি এমন নয় যে এটা আপনা আপনি হয়ে যায়। শুদ্ধ হওয়ার জন্যে আপনাকে এটা চর্চ্চা করতে হবে। এটা অনেকটা ভালো সঙ্গীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠার মতোই। সাফল্যের জন্যে তাদেরকে যেমন চর্চ্চা করতে হয়, শুদ্ধা মানুষ হওয়ার ব্যাাপরেও আপনাকে সেটা করতে হবে।
ঘর থেকে শুরু করুন। অর্থাৎ পথ ও বাইরের বিরক্তি বা কষ্ট দরজার বাইরে রেখে বাসায় প্রবেশ করুন হাসিমুখে। ঘরে ঢুকে প্রথমেই সবাইকে সালাম দিন।
– কলিং বেল বাজানোর পর দরজা খুলতে দেরি করলে বিরক্ত হবেন না।
– জুতো খুলে নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। তারপর ভেতরে ঢুকুন। ঘরে পরার জন্যে আলাদা স্যান্ডেল রাখুন।
– দরজায় কড়া নাড়ার সুযোগ থাকলে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে কাউকে ডাকাডাকি করবেন না। দরজায় কড়া নাড়ুন বা কলিং বেল বাজান।
– ঘন ঘন কলিং বেল চাপবেন না। বেল না থাকলে দরজার কড়া আস্তে নাড়ুন কিংবা বাসায় আছেন এমন কাউকে ফোন করে দরজা খুলতে অনুরোধ করুন।
– ভুল করে কেউ কলিং বেল চাপলে দরজা খুলে তাকে ধমকে উঠবেন না।
– অনুমতি ছাড়া কারো শোবার ঘরে ঢুকবেন না, বিছানায় বসবেন না। বসতে হলেও বিছানায় পারতপক্ষে পা তুলবেন না।
– অন্য কেউ রুমে থাকলে টিভি লাইট ফ্যান এসি ইত্যাদি চালানো কিংবা স্পিড ও ভলিউম বাড়ানো-কমানোর আগে তার অনুমতি নিন।
– অফিসের বিষয়গুলো অফিসেই রেখে আসবেন। বাসায় অফিসের বিষয় নিয়ে কোনো বিরক্তি প্রকাশ বা আলাপ করবেন না।
– বিশ্রামরত কারো অসুবিধা না করে যতটা সম্ভব নীরবে ও সন্তর্পণে আপনার কাজ করুন। বাসায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ কেউ থাকলে পারতপক্ষে কলিং বেল না বাজিয়ে আস্তে কড়া নাড়ুন।
– দরজা-জানালা বন্ধের কাজটি সন্তর্পণে করুন। কারো মুখের ওপর শব্দ করে দরজা বন্ধ করে দেবেন না।
– বাসায় প্রবেশের সময় বেল বাজানো/ কড়া নাড়ার আগে মনে মনে তিন বার বলুন-‘বাসায় যাচ্ছি শান্তির জন্যে। আমি শান্ত থাকব।’
– অপরিচিত কাউকে কারো বাসায় নিয়ে যাওয়ার আগে তার অনুমতি নিন।
– ওয়াশরুমে বা আড়ালে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করুন।
– কারো ঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় উঁকি দেবেন না, আড়চোখে তাকাবেন না। আড়ি পেতে অন্যদের কথা শোনা থেকে বিরত থাকুন।
– নিচতলার বাসিন্দাদের অসুবিধা হতে পারে এমন শব্দ যেন আপনার বাসায় না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকুন।
– বাড়িতে/ ছাদে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে প্রতিবেশীদের সুবিধা-অসুবিধা মাথায় রাখুন। আবাসিক এলাকায় উচ্চস্বরে গান-বাজনা ও ডিজে পার্টি থেকে বিরত থাকুন। এটি একটি সামাজিক অনাচার।
– বারান্দা থেকে ফেরিওয়ালার সঙ্গে দরদাম না করে বাইরের দরজায় আসতে বলুন।
– প্রতিবেশীর সমস্যা হয় এমন শব্দে অডিও প্লেয়ার বা টিভি চালাবেন না।
– বারান্দায় কাপড় শুকাতে দিলে খেয়াল রাখুন যেন তা নিচতলার বারান্দা ঢেকে না ফেলে। ভেজা কাপড় চুঁইয়ে পড়া পানি কিংবা ছাদ পরিষ্কারের পানি যেন কারো গায়ে না পড়ে।
– দুই বিল্ডিংয়ের ফাঁকে আবর্জনা ও পানি ফেলা থেকে বিরত থাকুন। বারান্দা ও জানালা দিয়ে কোনো ময়লা, পানের পিক, কুলি, থুতু ফেলবেন না।
– রান্নাঘরের সবরকম উচ্ছিষ্ট ময়লার বিনে রাখা পস্নাস্টিক ব্যাগের ভেতরে ফেলুন। ময়লা সংগ্রহকারী এলে তারপর বাইরে বের করুন। ভর্তি বা খালি বিন – সিঁড়িঘরে/ বাসার সামনে রেখে দুর্গন্ধ ছড়াতে দেবেন না। ময়লা সংগ্রহকারী আসার আগেই বিন বাইরে রেখে আসতে হলে পলিব্যাগের মুখ ভালোভাবে বন্ধ করুন।
– ছাদে বা বারান্দায় রাখা গাছের টবে পানি দেয়ার সময় খেয়াল রাখুন তা নিচতলার বারান্দায় বা পথচারী কারো গায়ে যেন না পড়ে।
– রান্নাঘর, শোবার ঘর, বসার ঘর, খাবার ঘর-সবখানেই ময়লা ফেলার ঝুড়ি/ বিন রাখুন। নির্দিষ্ট স্থানেই ময়লা ফেলুন।
– বৃষ্টির দিনে সদর দরজার বাইরে বাড়তি একটি পাপোশ রাখুন। এতে ঘর কাদা থেকে মুক্ত থাকবে।
– জমে থাকা পানি মশার বংশবৃদ্ধির উপযুক্ত স্থান। তাই ঘর বা বাড়ির আশেপাশে কোনো গর্ত, নারিকেলের খোল, ফুলের টব, ভাঙা প্লেট, গ্লাস ইত্যাদিতে পানি জমে থাকলে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করুন।
বাংলা৭১নিউজ/সর