বাংলা৭১নিউজ, শাহরিয়ার শাকির, শেরপুর প্রতিনিধি: নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ধানের শীষের প্রচারকালে শাসক দলের নির্দেশে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে সাজানো মিথ্যা মামলা, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার, পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ও টেলিফোনে হুমকি প্রদানসহ নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় নীলনক্সার নির্বাচন করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং গুম খুনের আশংকায় সংবাদ সম্মেলন করেছে শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের বিএনপি মনোনীত, ২০ দলীয় ঐক্যজোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপি সভাপতি মো. মাহমুদুল হক রুবেল। তিনি আজ সোমবার দুপুরে শেরপুর শহরের গৃদা নারায়নপুর এলাকার নিজ বাসায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পূর্বেই ক্ষমতাসীন দলের নির্দেশে শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৯টি মিথ্যা গায়েবী মামলা দায়ের করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করেছে। পুলিশ প্রশাসন নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও টেলিফোনে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করছে। যা নির্বাচনী আচরণ বিধির সম্পূর্ণ লংঘন। শুধু তাই নয় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর শ্রীবরদী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন দুলাল, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরে আলম, ভেলুয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. আলতাফ হোসেন, বিএনপি নেতা মো. মজিবর রহমান, ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. মোস্তফা শামীম, বিএনপি নেতা মো. লুৎফর রহমান, মো. বিপ্লব, নূর মোহাম্মদ, শহীদুল্লাহ, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলিফ উদ্দিন, মো. হাবিবুর রহমানসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করে নতুন করে ১৭টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভার তালিকা রিটার্নিং ও সহকারী রিটানির্ং অফিসারের কাছে জমা দেওয়া সত্ত্বেও শাসক দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা প্রশাসন এবং পুলিশের সহযোগিতায় আমার পূর্বনির্ধারিত পথসভায় ১৪৪ ধারা জারি ও গণসংযোগে বাধা প্রদান করে পন্ড করে দিচ্ছে। তিনি আরো জানান, ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় দলীয় সন্ত্রাসীরা ঝিনাইগাতীতে আমার দুটি নির্বাচনী অফিস ভেঙ্গে ছাত্রলীগের অফিস স্থাপন করেছে। এছাড়াও শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খঞ্চেপাড়া ও গড়খোলা বাজারে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা বিএনপি অফিস ভেঙ্গে দিয়েছে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করেছে। এসব ব্যাপারে জেলা রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।
বিএনপি মনোনীত, ২০ দলীয় ঐক্যজোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী মাহমুদুল হক রুবেল আরো অভিযোগ করে বলেন, শাসক দলীয় নেতা-কর্মীরা আগামী ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাকে গুম করে হত্যা করা হবে বলেও প্রচারণা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি এখন নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও শংকায় রয়েছি। আমাকে যদি গুম করে হত্যা করা হয় এর জন্য দায়ী থাকবে ডিবি পুলিশ। আপনাদের মাধ্যমে আমি এ ডিবি পুলিশের হাত থেকে মুক্তি চাই। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী এখন আমার প্রতিপক্ষ নয়, আমার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ। এরপরেও আমি নির্বাচনের দিন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার অঙ্গীকার করছি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে আজ সোমবার বিকালে শেরপুর শহরের সজবরখিলা এলাকার নিজ বাসায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ. কে. এম. ফজলুল হক পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ ও তাঁর নেতা-কর্মীদের নির্দোষ দাবী করে বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস