গাজাবাসী জর্ডানে চলে গেলে শান্তিতে থাকতে পারবেন বলে মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, গাজা এখন প্রায় ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। সেখানে সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই, আমি চাই অন্য কোনো স্থানে তাদের (ফিলিস্তিনিদের) বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে, যেখানে তারা হয়তো শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন তিনি। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি গাজা পরিষ্কার করতে আগ্রহী। পাশাপাশি, তিনি জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন, যাতে দেশটি গাজার ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেন।
ট্রাম্প বলেছেন, শনিবার টেলিফোন আলাপে তিনি জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহকে আরও ফিলিস্তিনিকে গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। ট্রাম্প বলেন, আমি তাকে বলেছি, আমি চাই আপনি আরও (ফিলিস্তিনি) গ্রহণ করুন। কারণ, আমি এখন গাজার পুরো এলাকা নিয়ে ভাবছি। এটি এক বিশাল সমস্যায় পরিণত হয়েছে, এটি সত্যিই এক বিশাল সমস্যা।
জর্ডানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা পেট্রা ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের খবর প্রকাশ করেছে, তবে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেনি। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জর্ডানে ২৩ লাখ ৯০ হাজারের বেশি নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫৯ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় সেখান থেকে পালিয়ে আসা লোকদের বংশধর।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চান, জর্ডান এবং মিশর গাজার ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে এগিয়ে আসুক এবং তিনি এ বিষয়ে রোববার মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে কথা বলবেন।
গাজায় ইসরাইলি হামলা কেবল হাজার হাজার মানুষকেই হত্যা করেনি, গাজার অধিকাংশ অবকাঠামোই গুঁড়িয়ে দিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যে বলছে, ইসরাইলি বিমান হামলায় প্রায় ৬০ শতাংশ ভবন, স্কুল ও হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে এবং প্রায় ৯২ শতাংশ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অনেক বাসিন্দা বারবার স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি কিছু কিছু মানুষ ১০ বারও স্থানান্তরিত হয়েছেন।
ট্রাম্পের এ মন্তব্য দীর্ঘদিনের মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির সঙ্গে বিরোধপূর্ণ। কারণ, দেশটি ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের জন্য দুই রাষ্ট্রের সমাধান প্রস্তাব করে আসছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস