মাদারীপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের গণশুনানিতে সরকারি অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির ১০৭টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে ৩৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ শুনানির জন্য সেবাপ্রার্থীরা সরাসরি উপস্থাপন করেন। যার তিনটির ব্যাপারে অনুসন্ধানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। আর ১০টি অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয় বলে জানান দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
বুধবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে চলে দুদকের এ গণশুনানি। এতে ৩৮টি দপ্তরের বিরুদ্ধে ১০৭টি অভিযোগ পাওয়া যায়।
২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতাল নিয়ে অভিযোগ তোলেন শিবচর উপজেলার বাসিন্দা সাবিনা ইয়াসমিন (৪০)। এ সময় তিনি পুলিশের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ আনেন।
শুধু সাবিনা ইয়াসমিন নন, তার মত অনেকেই দুদকের গণশুনানিতে এসে নানা বিষয়ে অভিযোগ তোলেন। এ সময় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে হয়রানি, দুর্নীতি, অনিয়ম, ঘুষ নেওয়াসহ নানা অভিযোগের বিবরণ দেন সেবাগ্রহীতারা।
বিআরটিএ নিয়ে অভিযোগ তোলেন লোকমান ফরাজি নামে এক গাড়িচালক। তিনি বলেন, লাইসেন্স নবায়নের নামে তার কাছে অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হয়েছে।
আরও যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো হল: মাদারীপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়, জেলা পাসপোর্ট কার্যালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জেলা নির্বাচন কার্যালয়, সোনালী ব্যাংক, সদর ও জেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়, শিক্ষা অফিস, শিক্ষা প্রকৌশলীর কার্যালয়, সড়ক ও জনপথ (সওজ) কার্যালয়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ, সমাজসেবা অধিদপ্তর, উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো।
গণশুনানিতে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, “দুদকের মূল কাজই দুর্নীতির দমন এবং প্রতিরোধ। গণশুনানি করার একমাত্র কারণ হচ্ছে, দুর্নীতির প্রতিরোধের লক্ষ্যে জনগণকে সম্পৃক্ততা করা। তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কারণ, নাগরিকের সচেতনতা ছাড়া শুধু আইন দিয়ে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব নয়।”
তার ভাষ্য, “আমরা সবার মাঝে একটি বার্তা দিতে চাই। তা হল, অনুপার্জিত অর্থ কেউ যেন ভোগ করতে না পারে, সেজন্য রাষ্ট্র কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তাই কেউ যদি ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম ও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে তাকে সেই ফল ভোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে আরও ছিলেন- দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, ঢাকা বিভাগের পরিচালক মো. মোরশেদ আলম, মাদারীপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. মোস্তফা হাওলাদার, জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জামান মিয়া, দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আতিকুর রহমান।
বাংলা৭১নিউজ/এবি