গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপিকে প্রধান বাধা মনে করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আর ক্ষমতাসীনদের কাছে গণতন্ত্র অবরূদ্ধ এমন অভিযোগ বিএনপির। শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক কর্মসূচি গণতন্ত্রের বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেশের প্রধান দুই দলের।
গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানিক রূপের পথে বিএনপি প্রধান অন্তরায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) শহীদ নূর হোসেন দিবসে রাজধানীর গুলিস্তানে নুর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নূর হোসেন সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে একজন সাহসী বীরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। নূর হোসেন নিজের বুকে পিঠে লিখেছিলেন, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক। সেদিন নূর হোসেনের শরীর ছিল জীবন্ত রাজনৈতিক পোস্টার।
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ভাবাআদর্শকে ধারণ করে যে রাজনৈতিক দলের জন্ম তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। তাদের কাছে গণতন্ত্র ছিল, হা এবং না ভোটের গণতন্ত্র। যে ভোটে না বাক্স ছিলই না। সেদিন কোনো কোনো কেন্দ্রে ১১০ শতাংশ ভোট পড়েছিল। তাদের গণতন্ত্র কারফিউ গণতন্ত্র। গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পথে বিএনপি প্রধান অন্তরায়। তিনি বিএনপিকে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান
এর আগে সকাল ৮টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল নূর হোসেন চত্বরে শ্রদ্ধা জানান। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, যে উদ্দেশ্যে বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে শহীদ হয়েছিলেন নূর হোসেন, যে গণতন্ত্রের জন্য নূর হোসেন জীবন দিয়েছিলেন, সেই গণতন্ত্র আজ অবরুদ্ধ।
তিনি আরো বলেন, নূর হোসেনের স্বপ্নকে আমরা ভূলুন্ঠিত করেছি। যারা তাকে হত্যা করে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল, আজকে তাদের সঙ্গে জোট করেই ক্ষমতার মসনদে বসে আছে সরকার।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজ নূর হোসেন দিবসে আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। শহীদ নূর হোসেনের রক্ত সরকার ব্যর্থ করে দিয়েছে। নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তারা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।
দুই বড় রাজনৈতিক দল ছাড়াও শ্রদ্ধা জানায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, গণফোরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নূর হোসেনের পরিবারব শ্রদ্ধা জানায়।
এসময় নূর হোসেনের বড় ভাই আলী হোসেন বলেন, নুর হোসেন ছোটবেলা থেকেই অনেক সচেতন ছিল।
নূর হোসেন প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গার বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে জাতীয় পার্টির রাঙ্গা নূর হোসেন প্রসঙ্গে যে বক্তব্য দিয়েছেন, নূর হোসেনের অতীতের কথা জানতেন তাহলে তিনি এ কথা বলতে পারতেন না। নূর হোসের সম্পর্কে বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য না দিতে আলী হোসেন অনুরোধ জানান।
বাংলা৭১নিউ্জ/এবি