বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: গণতন্ত্র নয় চুরিতন্ত্রই আওয়ামী লীগের মূলমন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আগে আওয়ামী লীগের মূলমন্ত্র বলা হতো গণতন্ত্র। ওটা একটি ভুল মন্ত্র- ওটা হচ্ছে চুরিতন্ত্র। প্রতিটি ব্যাংকে চুরি করে এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে যে ব্যাংক আমানতকারীরা বলছেন- ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি। বুধবার বিকালে রাজধানীর গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা আলমগীর বলেন, ছোটবেলায় বাচ্চারা না ঘুমালে মায়েরা গান শোনাত- ‘ছেলে ঘুমাল পাড়া জুড়াল, বর্গি এল দেশে।’ বর্গি এখন দেশের মধ্যে এসে গেছে।
দেশকে লুট করে নিয়ে চলে যাবে। এ অবস্থা তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। সরকারের প্রতিটি মেগা প্রজেক্ট হলো মেগা চুরির প্রকল্প। আবার সেই আওয়ামী লীগই সততার কথা বলে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশের অর্থনীতি, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ইসলামি ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক গিলে ফেলেছে। এমনকি সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক গিলে ফেলার চেষ্টা করেছিল। তারা অনেকগুলো ব্যাংক দিয়েছে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাইকে ব্যাংক দিয়েছে। কিন্তু সবখানে চুরি। ফারমার্স ব্যাংকে এত চুরি হয়েছে যে, মালিক মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে পদত্যাগ ও তাঁর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বরখাস্ত করা হয়েছে। দেশের আজ এমন অবস্থা বৈদেশিক আয় কমতে শুরু করেছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলোও লোকসানের সম্মুখীন। শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রতিদিন খবরের কাগজে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী নতুন একটি থিওরি দিয়েছেন। কোনো একটি দেশের, কোনো একটি পত্রিকায় তাঁকে নাকি তিন নম্বর সৎ নেতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাহলে এ দেশের মানুষ কোথায় যাবে? সৌদি আরবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সম্পদের বিষয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, আবার কোথায় থেকে ভুয়া কাগজ, ভুয়া টেলিভিশন-অনলাইন দিয়ে আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা বলে। আমরা বলেছি, প্রমাণ করেন। পারেননি বলে উকিল নোটিশ দেয়া হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে প্রমাণ করতে না পারলে, আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেশের স্বাধীনতার ৪৬ বছর পেরিয়ে গেছে, আমরা কি সেই গণতন্ত্রকে মুক্তি দিতে পেরেছি? তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রকে মুক্তি দিতে পারিনি। দেশে একদলীয় শাসন চলছে। বারবার সংবিধানের দোহাই দিয়ে গণতন্ত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া যাবে না। এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি চারদিকে শত্রু পরিবেষ্টিত। নিজেদের শক্তি নিয়ে জ্বলে উঠতে হবে। জাতীয়বাদী শক্তিকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে। সব প্রতিরোধের মুখে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এগিয়ে যেতে হবে। আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খারুরুল কবির খোকন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস