বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর, এবার গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে চুরি, নতুন কেচিগেট ও তালা লাগানোর অভিযোগ করেছেন দলটির একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টায় এক পোস্টে নুরুল হক নুর জানান, অফিস স্টাফ ও উপস্থিত নেতাকর্মীদের মারধর করে কার্যালয়ে রাখা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, মনোনয়ন বিক্রির টাকা-পয়সাসহ সব ডকুমেন্টস নিয়ে আমাদের কার্যালয়ে নতুন কেচিগেট ও তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কার্যালয়ের সামনে বহিরাগত ২০-২৫ জন মাস্তানকে বসিয়ে রেখেছে। যারা ঢুকছে তাদের মারধর করছে।
‘এর আগে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে মিটার নিয়ে চুপ গেছে। এভাবে একের পর এক অমানবিক আচরণ ও অত্যাচার করে যাচ্ছে মিয়া মশিউজ্জামান। তার খুঁটির জোর কোথায়, নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আমরা কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করবো না ইনশাআল্লাহ।’
সংগঠনটির নেতা শাকিলুজ্জামান বলেন, সকালে তালা ভেঙে সব কিছু নিয়ে গেছে। আমরা থানায় জিডি করবো। কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছি। অফিসে বিদ্যুৎ নাই।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক পোস্টে নুরুল হক নুর জানান, কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
কার্যালয়টি যে ফ্ল্যাটে, সেটির মালিক রেজা কিবরিয়াপন্থি গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মিয়া মশিউজ্জামান। বিষয়টি নিয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।
তবে কিবরিয়াপন্থি সংগঠনটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, এটি দলীয় বিষয় নয়। জামান সাহেব (মশিউজ্জামান) তার প্রোপার্টির মালিক হিসেবে ভাড়া পান নাই, বাড়িওয়ালা হিসেবে আইনগতভাবে যা যা করা দরকার, তিনি তা করছেন। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য নাই।
প্রায় ১৭ মাসের ভাড়া বকেয়া আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি একজনের ফ্ল্যাটে থাকবেন, ভাড়া দেবেন না। এটা তো আসলে হয় না। এটা জোর জবরদস্তি, দখলদারত্ব। ভাড়া না দিয়ে চুক্তির অন্য সুবিধা ভোগ করবো, তা তো হয় না। যেমন বলছে ৬ মাস আগে কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দিতে হবে, এটা তো হাস্যকর। কার্যালয়টি নেওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো ভাড়া দেওয়া হয়নি।
এর আগে গত ৭ জুলাই রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের দ্বন্দ্বের মধ্যে দলটিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়। ৭৩/২ পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারের ৬ষ্ঠ তলার এ কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দেন জমির মালিকের পক্ষে মো. রাশিদুল আজিম মিয়া।
কার্যালয় ছাড়ার নোটিশে বলা হয়, বর্তমানে আপনাদের দলে অন্তঃকলহ ও কাউন্সিল নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নানা রকম দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ ভবনের অন্যান্য শতাধিক ব্যবহারকারী এ মর্মে আতঙ্কিত ও ভীত। তাছাড়া ভবনের সমিতির পক্ষ থেকেও আমাদের এ ব্যাপারে সর্তক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান পরিস্থিতিতে ভবনের নিরাপত্তা বিঘ্ন হতে পারে বিধায় আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে অফিস খালি করে দেওয়ার অনুরোধ রইল।
গণঅধিকারর পরিষদের নুর পক্ষের দাবি ছিল, তারা কার্যালয়টি ৩ বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছেন। ভাড়ার শর্ত ছিল- যে কোনো পক্ষকেই কার্যালয় ছাড়ার ৬ মাস আগে নোটিশ দিতে হবে। তাই নোটিশ দিলেও তারা কার্যালয় ছাড়েননি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি