পচা, গলা মৃতদেহের সারি – বিহারের বক্সারের কাছে গঙ্গায় এই দৃশ্য দেখে এলাকায় মারাত্মক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে ৷ ভারতে করোনা সংক্রমণ কতটা মারাত্মক গভীরে এবং কতটা সুবিস্তৃত হয়েছে এ দিনের এই ছবি তারই প্রমাণ ৷ একটি -দু’টি নয়, চল্লিশটিরও বেশি এরকম পচা গলা, কোনওটা অর্ধদগ্ধ শরীর গঙ্গার জলে ভাসমান অবস্থায় দেখে শিউরে উঠছেন সকলে ৷ বিহারের উত্তরপ্রদেশ সংলগ্ন সীমানার কাছে চাউসা টাউনের ঘটনা এটি ৷
গতকাল থেকেই ভারতীয়দের অন্তরাত্মা পর্যন্ত বারংবার কেঁপে উঠেছে এমন মর্মান্তিক ছবি দেখে । গঙ্গায় ভাসছে পচা, গলা লাশ । কোনওটা আবার অর্ধেক পোড়া । স্থানীয় প্রশাসনের অনুমান, এই মৃতদেহ গুলো উত্তর প্রদেশ থেকে ভেসে এসেছে ৷ প্রশাসনের ধারণা, বিভিন্ন কভিড আক্রান্তদের মৃতদেহ যা তাঁদের পরিবার দাহ করতে কিম্বা শেষকৃত্য করতে পারেননি, তাঁরাই নিজের পরিজনের মৃতদেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছেন ৷
গঙ্গা, যমুনায় এমন মৃতদেহের সারি দেখে এ বার মুখ খুললেন বিখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরিন । সদ্যই কভিডে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি । গোটা একটা বছর বাড়ির মধ্যে থেকেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিজেই জানিয়েছিলেন সে কথা । বাড়িতেই তিনি আইসোলেটেড হয়ে রয়েছেন । বাড়িতে বসেই সংবাদ মাধ্যমের পাতায় গঙ্গা-যমুনার ভয়াবহ চিত্র দেখে শিউরে উঠেছেন তিনি । ট্যুইট করে নিজের উদ্বেগের কথাও জানিয়েছেন তসলিমা । লিখেছেন, ‘‘ডজন ডজন দেহ গঙ্গা-যমুনায় ভেসে বেড়াচ্ছে । সত্যিই অদ্ভুত এক দুনিয়ায় বাস করছি আমরা ।’’
বিহারের যে গ্রামে ওই মৃতদেহ গুলো দেখা গেছে, সেই চাউসা জেলার জেলা আধিকারিক অশোক কুমার জানিয়েছেন, ‘‘৪০-৪৫টি মৃতদেহ ভাসছিল৷’’ তবে স্থানীয় মানুষের কথায় একশো-র কাছাকাছি মৃতদেহও থাকতে পারে ৷ আরেক কর্মকর্তা কেকে উপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘এই পচা গলা লাশগুলি অন্তত পাঁচ দিন থেকে সাতদিন আগে নদীতে ভাসানো হয়েছিল৷’’ তিনি জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷
উত্তরপ্রদেশ থেকেই এই মৃতদেহ ভাসানো হয়েছে বলে তাঁরা নিশ্চিত৷ তাঁদের ধারণা বারাণসী কিম্বা এলাহাবাদ থেকে এই দেহ ভাসানো হয়েছে৷ এর আগে উত্তরপ্রদেশের হামিরপুরের যমুনাতেও প্রচুর পচা গলা মৃতদেহ ভাসতে দেখা গিয়েছিল।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে