বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায় সৌদি আরবের ১৬ নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের খুবই ঘনিষ্ঠ সাবেক একজন উপদেষ্টা সাউদ আল কাহতানি, সৌদি আরব থেকে যাওয়া হত্যা মিশনের নেতৃত্ব দেয়া মাহের মুত্রেব। এ ছাড়া ওই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া স্কোয়াডের অন্য ১৪ জনের নাম রয়েছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
সাংবাদিক জামাল খাসোগি সৌদি আরবের নাগরিক। কিন্তু তিনি ক্রাউন প্রিন্সের কড়া সমালোচক। ফলে সেখানে দমনপীড়নের সময় তিনি চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতে থাকেন। তাকে গত বছর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি আরবের কনসুলেটের ভিতরে নিয়ে হত্যা করা হয়।
গত বছর ২রা অক্টোবর হত্যা করা হয় জামাল খাসোগিকে। তাকে হত্যা করতে সৌদি আরব থেকে একটি দল পৌঁছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তাদের কনসুলেটে। সেখানে খাসোগি প্রবেশের পর তার আর দেখা পাওয়া যায় নি। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে তার মৃতদেহ এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে জানা যায় নি কি করা হয়েছে অথবা কোথায় রাখা হয়েছে।
খাসোগিকে হত্যার দায় বার বারই অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। পরে তারা স্বীকার করেছে, সৌদি আরবের একটি এজেন্ট দল ওই হত্যাকান্ড পরিচালনা করেছে। তাদের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। অভিযুক্ত ওই মিশনের ১১ সন্দেহভাজনের বিচার সৌদি আরবে শুরু হয়েছে এ বছর শুরুর দিকে। কিন্তু এসব মামলা এখনও রয়েছে ‘ঢাকা’ অবস্থায়। অর্থাৎ এর ভিতরের কোনো কথা জানা যাচ্ছে না। এতে ভূমিকা রয়েছে ক্রাউন প্রিন্সের। খাসোগি হত্যাকান্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে রুদ্ধদ্বার শুনানিতে অংশ নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। সেখানে ডিসেম্বরে একটি প্রস্তাব পাস হয়। তাতে খাসোগি হত্যার জন্য ক্রাউন প্রিন্সকে দায়ী করা হয়। তবে প্রকাশ্যে এমন অবস্থান নিতে অস্বীকৃতি জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
উল্টো ডিসেম্বরে ওভাল অফিসে এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স সম্পর্কে বলেন, তিনি সৌদি আরবের নেতা। তারা খুব ভাল বন্ধু। এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সৌদি আরব যে অবস্থান নিয়েছে তা কি ক্রাউন প্রিন্সের অবস্থান? জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, এই মুহূর্তে তাই-ই তো।
ওদিকে এ মাসের শুরুর দিকে ওয়াশিংটন পোস্টে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, জামাল খাসোগির চার সন্তানকে তাদের পিতা হত্যার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ‘মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ি’ দেয়া হয়েছে। আরো দেয়া হয়েছে মাসে পাঁচ অংক পরিমাণ ভাতা। খাসোগি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে একটি বোঝাপড়ায় আসার চেষ্টা করছে সৌদি আরব। এর মধ্য দিয়ে সৌদি আরবের এজেন্টরা তার পিতাকে যে হত্যা করেছে সে সম্পর্কে সমালোচনা থেকে বিরত থাকতে তাদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এতে আরো বলা হয়, সামনের মাসগুলোতে ‘ব্লাড মানি’ হিসেবে দর কষাকষির মাধ্যমে কয়েক শত কোটি ডলারের বোঝাপড়া হতে পারে।
বাংলা৭১নিউজ/এস.এম