মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৩:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ডেঙ্গুতে মাকে হারিয়েছি, আর যেন কেউ মারা না যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী চীনে হাসপাতালে ছুরি হামলায় নিহত ২, আহত ২৩ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে আইইবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে দুই পরিবর্তন সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তথ্য আদান-প্রদান করবে চসিক-সিএমপি ধান ও চালের মানে আপস করা হবে না : খাদ্যমন্ত্রী সুজানগরে বিপুল পরিমাণ টাকা ও ১০ সহযোগীসহ চেয়ারম্যান প্রার্থী আটক দানবীর আরপি সাহার অন্তর্ধান ও মির্জাপুর গণহত্যা দিবস ৬ মাস বন্ধ থাকবে কমলাপুর-টিটি পাড়া সড়কের একটি লেন প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের দুই হাত ভেঙে দিলো কিশোর গ্যাং চাল-শাকসবজি-আমসহ অনেক ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে ঝিনাইদহে হাসপাতালে নবজাতক চুরি করতে এসে ২ নারী আটক! ভিসা হয়নি বেশিরভাগ হজযাত্রীর, সময় আরও বাড়ছে আজই সিরিজ নিশ্চিত করতে পারবে বাংলাদেশ! ৮ বিভাগেই বৃষ্টির আভাস, বিদায় নিতে পারে তাপপ্রবাহ লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিলেন মোদী উপজেলা নির্বাচন সিরাজগঞ্জে গোপন বৈঠক, ৫ প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তার ৬ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ ন্যায্যমূল্যে পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে কাজ করছে টিসিবি ঢাকায় আসছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

খালেদা জিয়ার কারামুক্তিতে বাঁধা আরও ৫ মামলা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বুধবার, ১৬ মে, ২০১৮
  • ২১৬ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দ-িত হয়ে কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সহসাই কারামুক্তি পাচ্ছেন না।

বুধবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আপিল বিভাগ বহাল রেখেছেন। তবে এ মামলায় জামিন বহাল থাকলেও তার কারামুক্তিকে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আরও ৫ মামলা। আর এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতের আদেশ রয়েছে।

ফলে ওইসব মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন না হওয়া পর্যন্ত কারামুক্তির সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা কারাভোগ করে চলেছেন তিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলেও তিনি এ মামলায় কারাভোগ করেছেন। সব মিলিয়ে এ মামলায় মোট প্রায় পাঁচ মাসের কারাভোগ পূর্ণ হতে চলেছে।

এদিকে বুধবার বিকালে ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল হকের আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার জামিননামা দাখিল করেন। তবে আপিল বিভাগের আদেশ এদিন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে না আসায় তা কারাগারে পাঠানো হয়নি।

জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ছাড়াও আরও পাঁচটি মামলায় ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। এসব মামলায় এখনও পর্যন্ত তিনি জামিনপ্রাপ্ত হননি। মামলাগুলের মধ্যে ঢাকার আদালতের দুটি, কুমিল্লার আদালতের দুটি ও নরাইলের আদালতের একটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তার জামিনের বিষয়টি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।

তবে অচিরেই জামিনের বিষয়গুলো নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। কারামুক্তি পেতে হলে এসব মামলায় জামিন নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ওই পাঁচ মামলার মধ্যে বিশেষ করে কুমিল্লার দুটি মামলায় জামিন শুনানির পরও নি¤œ আদালত তার জামিন মঞ্জুর-না মঞ্জুর নিয়ে গড়িমসি করছে। সে কারণে আজ-কালই তিনি কারামুক্তি পাবেন তা ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে এটা নিশ্চিত যে, একটা যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে তিনি কারামুক্তি পাবেন।

খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ঢাকার আদালতের দুটি, কুমিল্লার আদালতের তিনটি ও নরাইলের আদালতের একটি মামলায় তাকে জামিন নিতে হবে। এরপরই তিনি (খালেদা জিয়া) কারাগার থেকে বের হতে পারবেন।

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) কারামুক্তি পেতে হলে ঢাকার আদালতের দুটি, কুমিল্লার আদালতের তিনটি ও নরাইলের আদালতের একটি মামলায় তাকে জামিন নিতে হবে।

কুমিল্লার আদালতের তিনটি মামলার মধ্যে দুটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। আর কুমিল্লার অপর মামলাটিতে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকলেও তা ভ্যাকেট হওয়ায় ওই মামলায়ও তাকে জামিন নিতে হবে। এসব মামলায় জামিন হলেই তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাঁধা থাকবে না।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। ওই দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন নিতে হবে। এ ছাড়া আরও চারটি মামলায় আদালতের প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট বা হাজিরা পরোয়ানা রয়েছে।

ওই সব মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে পরোয়ানা কাটাতে হবে। আর এসব মামলায় জামিন হলেই তিনি কারামুক্তি পাবেন।

চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদ- ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদ- এবং প্রত্যেকের ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জারিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। প্রথম শ্রেণীর কারাবন্দি হিসেবে বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।

যে পাঁচ মামলা কারামুক্তিতে বাঁধা: গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া ভুয়া জন্মদিন পালনের মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম গত বছরের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন। ওই বছরের ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। কারামুক্তি পেতে হলে এ মামলায় তাকে জামিন নিতে হবে।

বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে মানহানি মামলায়ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী এ মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে রাজধানীর তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এ মামলায়ও এখনও পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন হয়নি।

কুমিল্লা আদালতের দুটি মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার সংলগ্ন জগমোহনপুর এলাকায় বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের মামলায় গত ২ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাস কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় আসামাত্র দুর্বৃত্তরা পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে ঘটনাস্থলে সাতজন ও হাসপাতালে  নেয়ার দুদিন পর আরও একজনসহ মোট আটজন মারা যান ও ২৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে দ-ধির ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৬ মার্চ কুমিল্লার আদালতে ওই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। চার্জশিটে খালেদা জিয়াসহ ৭৮ জনকে আসামি করা হয়।

অপর মামলাটি ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রামের হয়দারপাড়া এলাকায় একটি কাভার্ডভ্যান পোড়ানো অভিযোগে দায়ের করা হয়। খালেদা জিয়াসহ এ মামলায় ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। কুমিল্লার ওই দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি হলেও আদালত জামিনের বিষয়ে আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া নড়াইলে মানহানির অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায়

খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ওই মামলায়ও খালেদা জিয়া অধ্যাবধি জামিন পাননি।

খালেদা জিয়ার কারাভোগের পাঁচ মাস:

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিন চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই কারাগারে রয়েছেন তিনি। রায় ঘোষণার পর থেকে তিন মাস ৮ দিন অতিবাহিত হলেও এর সঙ্গে আরও ৪৯ দিনের কারাভোগ যোগ করতে হবে। কারণ ২০০৮ সালে কারাবন্দি থাকা অবস্থায় এ মামলায় তাকে আটক দেখানো (শ্যোন এরেস্ট) হয়।

আইন অনুসারে ওই সময় এই মামলায় আটক থাকা ৪৯ দিনও দ-ভোগ হিসেবে দেখাতে হবে। সে হিসেবে বর্তমান তিন মাস ৮ দিন ও আগের ৪৯ দিন মিলে প্রায় পাঁচ মাস করাভোগ করা হয়ে গেছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ক ধরায় এ বিষয়ে বলা আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ৩ সপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে গ্রফতার করা হয়। জামিন পাওয়ার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। অবশ্য মুক্তির আগেই তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এর ২০ দিন পর ২৩ জুলাই ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ফলে সেদিন থেকেই এ মামলায় খালেদা জিয়ার কারাভোগ শুরু হয়। মুক্তির আগ পর্যন্ত এ মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন ৪৯ দিন। অবশ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওই সময় খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন মোট এক বছর আট দিন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com