বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: অনিয়ম ও দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালকের দপ্তরে। মহাপরিচালকের আইনবহির্ভূত ক্ষমতা প্রয়োগ নিয়েও পাউবোর শ্রমিক-কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন।
অভিযোগ হচ্ছে, বেআইনিভাবে মহাপরিচালক ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর শ্রমিক-কর্মচারীদের বদলি, পদায়নসহ যাবতীয় ক্ষমতা নিজে কুক্ষিগত করে নিয়েছেন। এ নিয়ে প্রতিদিনই পাউবোতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হচ্ছে। ঘেরাও করা হচ্ছে মহাপরিচালকের দপ্তর। এতে করে বোর্ডজুড়ে যেমন ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে; তেমনি মাঠ প্রশাসন হয়ে পড়েছে স্থবির।
এ অবস্থার নিরসন না হলে আগামী ১৯ ডিসেম্বরের সমাবেশ থেকে বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ।
জানা যায়, পাউবো মহাপরিচালক মো: জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে আইনবহির্ভূত কর্তৃত্বের অভিযোগ আনেন প্রতিষ্ঠানটির ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর শ্রমিক-কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ হচ্ছে, বেআইনিভাবে মহাপরিচালক ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর শ্রমিক-কর্মচারীদের বদলি, পদায়নসহ যাবতীয় ক্ষমতা নিজে কুক্ষিগত করেছেন।
এ পরিস্থিতি নিরসনে গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রমিক- কর্মচারী লীগ পাউবো মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েও এর কোনো সুফল পায়নি। এতে করে বোর্ডে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। প্রতিদিনই বোর্ডে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। ঘেরাও করা হচ্ছে মহাপরিচালকের দপ্তর।
পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি মো: আব্দুল মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০০০ এর অধীনে গঠিত পাউবো পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশাসনিক কর্মকা- সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ‘ডেলিগেশন অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পাওয়ার-২০০৮’ জারি করা হয়েছে।
জারিকৃত এই আদেশে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বোর্ডের কোন ধরনের কর্মকান্ড কোন কর্মকর্তা সম্পন্ন করবেন। ডেলিগেশন অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পাওয়ার-২০০৮ মোতাবেক বোর্ডের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর শ্রমিক-কর্মচারীদের বদলি, পদায়নসহ যাবতীয় সংস্থাপনিক কাজের দায়িত্ব বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন)-এর ওপর অর্পণ করা হয়েছে।
কিন্তু পাউবো পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত ‘ডেলিগেশন অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পাওয়ার-২০০৮’ বিধান বহাল থাকা অবস্থায় সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বদলি ও পদায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে শুধুমাত্র মহাপরিচালকের অনুমোদনক্রমে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে সমুদয় ক্ষমতা মহাপরিচালক নিজে কুক্ষিগত করেছেন।
এতে করে বোর্ডের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বদলি ও পদায়নসহ যাবতীয় সংস্থাপনিক/প্রশাসনিক কর্মকান্ডে চরম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ক্ষতি হচ্ছে বোর্ডের নিয়মিত সব কর্মকান্ডের। অন্যদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে তা যে কোনো মুহূর্তে বিস্ফোরিত হয়ে তীব্র আন্দোলন-সংগ্রামে রূপ নিতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রমিক-কর্মচারী লীগ অনতিবিলম্বে মহাপরিচালকের জারি করা এই বেআইনি আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তারা বলেন, এই নির্বাহী আদেশ বাতিলপূর্বক মহাপরিচালকের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির সব দায়ভার পাউবো মহাপরিচালককেই বহন করতে হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল বুধবার পাউবো মহাপরিচালক মো: জাহাঙ্গীর কবির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিয়মেই সবকিছু হচ্ছে। আমি নতুন করে কিছু করিনি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি